নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ নারীদের নিয়ে মেলার আয়োজন করেছেন বহরমপুর নারীকুঠি সংগঠনের সদস্যরা। সেই মেলাতে পাটের পসরা সাজিয়ে শিমুলিয়া থেকে এসেছেন হস্তশিল্পী নুরফিয়া বিবি। মেলায় ফ্যাশন দুরস্ত জিনিসের মাঝে ধুঁকছেন জেলার এই শিল্পীরা। মেলায় এসে তিনি জানান, “সংগঠনের পক্ষে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাই এসেছি। মেলায় স্টল দিতে কোনও টাকা লাগেনি। কিন্তু থাকা মেলায় এসে যেরকম বিক্রি বাট্টা হবে ভেবেছিলাম। সেরমটা হচ্ছে না। বহরমপুরের লোকজন এসব কাজ বোঝে না। কলকাতা, দুর্গাপুরে এই জিনিসের অনেকে চাহিদা রয়েছে।”
বহরমপুর শহরের কালেক্টরেট ক্লাব প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে নারীকুঠি মেলা। ৫ই জানুয়ারি শুরু হয়েছে এই মেলা। এই মেলার বিশেষত্ব এর নাম। মেলায় রয়েছে প্রায় ৮৫ টি স্টল। শাড়ি, বিভিন্ন পোশাক তো বটেই হাল ফ্যাসানের জুয়েলারি থেকে ব্যাগ। রোজকার ব্যবহারের বিভিন্ন জিনিস থেকে পাটের তৈরি নানান সামগ্রী বা খাবার, সব স্টলই দিয়েছেন মহিলারা। শহর ও মুর্শিদাবাদ জেলা তো বটেই ভিন রাজ্য থেকেও সেখানকার বিশেষত্ব নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছেন তাঁরা। মেয়েদের স্বনির্ভর করা ও ব্যবসাতে মেয়েদের সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষে এই মেলা জানানো হয় উদ্যোক্তাদের পক্ষে। নারীকুঠি’র এক সদস্য চন্দ্রানী সান্যাল জানান, “মেয়েদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। আজকের যুগে মেয়েরা কোনও কিছুতেই পিছিয়ে নেই তবে ব্যবসায় কেন পিছিয়ে থাকবে?”
আসামের ট্রাডিশনাল পোশাক ‘মেখলা’ নিয়ে সুদূর আসাম থেকে বহরমপুরে এসেছেন পুজা দত্ত। বিভিন্ন শাড়ি বা পোশাকের পাশাপাশি এবারের নারীকুঠি মেলায় রমরমিয়ে বিক্রি চলছে মেখলার। তিনি জানান, “আগেও এই নারীকুঠি মেলায় এসেছি। তবে এবারে বিক্রি বেশি। বেচাকেনাও ভালোই হচ্ছে। বহরমপুরে এই নতুন ধরণের পোশাকের চাহিদাও বাড়ছে।” মেলায় স্টল দিয়েছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাটের কাজের হস্তশিল্পীরা। তাঁরাও তাঁদের কাজের বিভিন্ন সুন্দর দ্রব্যের পসরা সাজিয়েছেন মেলায়। তবে আজকালকার ফ্যাসানদুরস্ত মার্কেটে কমেছে পাটের জিনিসের চাহিদা, আক্ষেপ বিক্রেতাদের।
সব মিলিয়ে উৎসবের মেজাজে শীতের মরশুমে রমরমিয়ে চলছে মেলা। মহিলাদের নিয়ে এই মেলার উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানাচ্ছেন শহরের মানুষ। মেলা ঘুরতে এসে শহরের বাসিন্দা প্রজ্ঞা পারমিতা জানান, মেয়েদের মেলা দেখেই ভালো লাগছে। তবে মেলায় এসে ছোট স্টলগুলি ঘুরে দেখার বার্তা দিচ্ছেন তাঁরা। পাটের হস্তশিল্পীদের বিক্রি বাড়ুক চাইছেন সকলে।