নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ মুর্শিদাবাদের পাটের সুনাম রয়েছে বাংলার বাইরেও। কিন্তু রক্তজল করে যে চাষী মাঠে ফলাচ্ছেন সোনালী তন্তু, সেই চাষীই সরকারের কাছে পাট বেচতে পারছেন না। জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া তাদের কাছ থেকে পাট কিনছে না। অথচ সরকার পাটের সহায়ক মূল্য বেঁধে দিয়েছে ৫০৫০ টাকা। লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন বৃহস্পতিবার সেই অভিযোগে সরব হলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। স্পীকারকে উদ্দেশ্য করে এদিন তিনি বলেন, “মুর্শিদাবাদের লক্ষ লক্ষ চাষি এই পাট চাষের সঙ্গে জড়িত। বাংলার মানুষও তা জানেন। কিন্তু জেসিআই তাঁদের থেকে পাট কিনছে না। তাহলে এই মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস কার্যকর করে কি লাভ? তারা এই পাট না কিনলে তাহলে এই সমস্ত গরিব চাষিরা যাবে কোথায়?” মহাজনরা জোট বেঁধে বাজার লুঠ করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন সাংসদ।
একইসঙ্গে ভারতের জাতীয় পাট বোর্ডের দিকেও আঙ্গুল তোলেন অধীর। তিনি বলেন, “ জাতীয় পাট বোর্ড অনেক বড়বড় কথা বলে। বলেছিল, পাটজাত দ্রব্য বানিয়ে চাষিদের সাহায্য করব এবং একটি বৈচিত্র্য পূর্ণ পাটের বাজার বানিয়ে দেব। কিন্তু এখনও দেখা মিলল না সেই বাজারের।” মুর্শিদাবাদের সমস্ত পাট চাষিদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সরকারের উদাসিনতার কারণেই পাটের বাজার নিম্নগামী হচ্ছে বলে দাবি তাঁর। কতজন কৃষক সহায়ক মূল্যে পাট বিক্রি করেছেন জেসিআইয়ের কাছে সেই তথ্য হাউসে তুলে ধরবার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। অধীরের দাবিকে মান্যতা দিচ্ছেন কৃষক সভার মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি সচ্চিদানন্দ কান্ডারী। তিনি বলেন, “পাট চাষিরা পাট বেচতে গিয়ে হয়রান হচ্ছেন। বেসরকারিভাবেও চাষি ধান বিক্রি করতে পারছেন না। পাট চাষিদের অবস্থা ভাল নয়।” তৃণমূলের ক্ষেত মজুর সংগঠনের জেলা সভাপতি আবদুল মাতিনও বলেন, “জেসিআই পাট কিনছে না বলেই চাষিরা দালালের কাছে পাট বিক্রি করছেন বাধ্য হয়ে। এবছর জেলার পাট চাষিদের অবস্থা খুব খারাপ।”