নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সেদিনই জেলা কার্যালয়ে তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদে জেলা সংগঠনের নয়া সভাপতি অপূর্ব সরকারকে বরণ করেছিলেন জেলা নেতারা। বিতর্কিত হুমায়ুন না থাকায় বাঁকা হাসি হেসেছিলেন দলে হুমায়ুন বিরোধীরা। ভ্রু কুঁচকে ছিল হুমায়ুন ঘনিঠ কারও কারও। সে জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন হুমায়ুনই। কলকাতা এম এল এ হস্টেলে অপূর্বর গলা জড়ানো নিজের হাসিমুখের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করলেন নিজেই। এমনকি ছবি তোলার আগে কিছু আলোচনা ও হয়েছে বলে আম পাবলিককে জানিয়েছেন ও তিনি। কী সেই আলোচনা? সতর্ক হুমায়ুন বলেন, “ডেভিড (অপূর্ব) আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সহকর্মী। সে চায় দলটাকে বাঁধতে। একসঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে চলতে। আমি তাকে সবরকমভাবে সাহায্য করব বলেছি।”
সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি শাওনী সিংহরায় বিরোধী অন্যতম মূখ হুমায়ুনের একাধিক দাবির পক্ষে ছিলেন অপূর্ব। ভরতপুরের দুটি ব্লকে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে ব্লক সভাপতি পদে বসাতে চেয়েছিলেন বিধায়ক। কিন্তু তাঁর কথায় কর্ণপাত না করে ভরতপুর ১এ নজরুল ইসলাম ওরফে টার্জানকে ব্লক সভাপতির পদে বসান শাওনী। একইভাবে ভরতপুর ২ এ ব্লক সভাপতির পদ থেকে হুমায়ুন ঘনিষ্ঠ আজহারুদ্দিন ওরফে সিজারকে সরিয়ে ওই পদে বসেন ‘শাওনী ঘনিষ্ঠ’ মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমন। যাঁদের সঙ্গে হুমায়ূনের বনিবনা ছিল না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে সেই চাপা ক্ষোভ বিস্ফারিত হয়। বিধায়ক তাঁর ঘনিঠদের নির্দল প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধেই দাঁড় করিয়ে দেন। যা সেই সময় তৃণমলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল। এদিকে নির্বাচনে জিতে কর্মাধ্যক্ষ হয়েছেন মুস্তাফিজুর।
একই ঘটনা ঘটেছিল নওদা, জলঙ্গি, রেজিনগর, হরিহরপাড়াতেও। সে কথা জানিয়ে এদিন হুমায়ুন বলেন, “আমরা তাই সভাপতি বদল চেয়েছিলাম। রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের দাবি মেনে নিয়ে শাওনীকে সরিয়ে দিয়েছে।” তাহলে কি ফের ব্লক সভাপতি পদে আজহারুদ্দিন ওরফে সিজারকে ভরতপুর ২ ব্লকে দেখা যাবে? হুমায়ুন বলেন, “ আমি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি ওরা (টারজান ও সুমন) কীভাবে পুরনো জেলা সভাপতির ইন্ধনে পঞ্চায়েত ভোট করে দলের মুখ ডুবিয়েছিল। এখন দল কাকে সরাবে কী বসাবে তাও দলই ঠিক করবে। আমি এ ব্যপারে কিছু বলতে পারব না।” দলের অন্দরে অবশ্য সুমনের ব্লক সভাপতির পদ হারানোর তত্ত্বই উঠছে অন্য একটি সমীকরণে। তৃণমূলে এক নেতা এক পদ নীতি চালু আছে। সেই নীতি মানলে মৎস্য কর্মাধ্যক্ষকে একটি পদ ছাড়তে হবে। ব্লক সভাপতির পদ ছাড়াটাই সেক্ষেত্রে সুবিধার, বলছেন তৃণমূলের প্রবীণরা। ২৩ তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে কলকাতা যাবেন জেলা নেতারা। তারপরেই হয়ত ভরতপুরের মতো একাধিক ব্লকে দলের সভাপতির মুখ বদলের সম্ভাবনা, দাবি তৃণমূল সূত্রের।