India Bangladesh Relations ভারত বাংলাদেশ দোস্তি ফিরুক চাইছেন অধীর

Published By: Imagine Desk | Published On:

India Bangladesh Relations  বাংলাদেশের বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে বদল হয়েছে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কেও। এর মাঝেই ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক ফেরানোর দাবি জানালেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী Adhir Ranjan Chowdhury । শুক্রবার জানানো হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি Vikram Misri ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন ।  ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক সফর । এই সফরটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশের হিন্দু জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে।  শেখ হাসিনার সরকার উৎখাত হওয়ার পর এটিই প্রথম এই মাপের কুটনৈতিক সফর। এই সীদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ভারত বাংলাদেশের সীমান্তর্তী জেলার প্রাক্তন এই সাংসদ।

 

India Bangladesh Relations শুক্রবার অধীর বলেছেন, এই কুটনৈতিক সফর আরও আগে হওয়া দরকার ছিল। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে কোন অশান্তি চলে পাশের দেশেও প্রভাব পরে। প্রতিবেশী বাংলাদেশে যে ঘটনাই ঘটুক, তার আঁচ সীমান্তবর্তী রাজ্যে পড়বে। বাংলাদেশে শান্তি ফেরানোর জন্য ভারতের উচিৎ বাংলাদেশকে প্রভাবিত করা। অধীর চৌধুরী বলেছেন, “ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে  উচিৎ বাংলাদেশ  সরকারের সঙ্গে স্থায়ী একটি সম্পর্ককে  নতুন করে তৈরি করা। হাসিনার পর যে সরকার এসেছে সেই সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের চেনাজানা কম, কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই”।অধীর আরও  বলেন, “ ভারত বর্ষের সরকারের প্রথম কাজ হবে বাংলাদেশের বর্তমান  সরকারের পরিকাঠামোর  সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের  সম্পর্ককে স্বাভাবিক করা,  বন্ধুত্বপূর্ণ করা। তার পরেই আমাদের কথা বলতে পারবো”। অধীরের দাবি, বাংলাদেশের বিষয় আর আভ্যন্তরীন বিষয় নয়। এই বিষয়ে সকলের বলার অধিকার আছে।

India Bangladesh Relations বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের।

India Bangladesh Relations দুই দেশের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ভূগোলের গভীর সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অসামান্য অবদান রয়েছে, বিশেষ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমর্থন প্রদান করে। ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, জলসম্পদ ব্যবহার, নিরাপত্তা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক। বাণিজ্যিক দিক থেকে, ভারত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। দুই দেশই একে অপরের বাজারে নিজেদের পণ্য রপ্তানি করে এবং ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ভারত বাংলাদেশকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে, যেমন অর্থনৈতিক সাহায্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিভিন্ন প্রকল্পে সহযোগিতা।

India Bangladesh Relations জলসম্পদের ক্ষেত্রে, গঙ্গা ও তিস্তা নদী নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কিছু অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। তবে, দুই দেশই এসব সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং একে অপরের জলের  অধিকার সম্মান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপত্তার দিক থেকেও বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের সহযোগী। দুই দেশ সীমান্ত সুরক্ষায় একে অপরকে সহায়তা করে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একত্রে কাজ করে। কিন্তু পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশিরভাগ সময় সচল থাকলেও, ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্কের বড় অবনতি দেখা গেছে।বাংলাদেশে সংখ্যালঘু এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, অত্যাচার ঘিরেও তৈরী হয়েছে বিতর্ক।  এছাড়া, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারী ছাত্রনেতা এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর কাছ থেকে ভারত যে বার্তা পেয়েছে, তা নিয়ে তাদের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে।

India Bangladesh Relations  পাল্টাপাল্টি বিবৃতি এবং বক্তব্যও আসছে দুই দেশের মধ্যে। এ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়েছে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং তার জামিন আবেদন নামঞ্জুরের পর থেকে চলা সহিংসতা ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এর মাঝেই এই সিদ্ধান্তের দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।ভারতের দাবি, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে ভারত বিরোধী একটি অবস্থান প্রকাশ পেয়েছে, যা সম্প্রতি সেভেন সির্স্টার্স (ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য) লক্ষ্য করে বক্তব্য ও হুঁশিয়ারি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে উদ্বেগ এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

India Bangladesh Relations এর মাঝেই শুক্রবার জানানো হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন ।  ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক সফর ।সেখানে দু’দেশের বিভিন্ন আগ্রহের বিষয় নিয়ে সচিব পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার এমন তথ্য জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল। এছাড়া, রনধীর জয়সওয়াল চিন্ময় প্রভূ সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, চিন্ময় প্রভুর আইনি অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং তার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করা হবে, এমন আশ্বাস দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।