Independence Day 2022: স্বাধীনতার ৭৫ বছরে সেই অন্ধকারেই পথশিশুরা ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

পবিত্র ত্রিবেদীঃ বহরমপুরঃ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির উদযাপন হল মুর্শিদাবাদ জেলা সহ সর্বত্র। আনন্দের দিবস। গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস স্মরণ করার দিন । ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখার শপথ গ্রহণের মুহূর্তও সেটি। এক সুরে দেড়শ কোটি ভারতীয়র হৃদয়ের জাতীয় পতাকা উত্তোলন হলো। সংস্কৃতির শহর বহরমপুরেও পাড়ায়, অফিসে সর্বত্র উচ্ছাসের ছবি। কিন্তু, এদিনও বহরমপুরের রাজপথে ভিক্ষার হাত বাড়িয়ে থাকা কলকাতার যিশু অর্থাৎ পথ শিশুদের মলিন ছবিটা পাল্টালো না। বাসস্ট্যান্ডে, গোরাবাজার সুইমিংক্লাবের মোরে রবিবার সকালেও শৈশবকে ভিক্ষার হাত বাড়িয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। অভাবের তাড়নায় কিংবা অভিভাবকদের চাপেই যাই হোক। স্বাধীনতার 75 বছরেও সামগ্রিকভাবে এই ছবি দূর হলো না বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন ।

তাদের বক্তব্য, এই 75 বছরে আমরা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়েছি। উন্নতি হয়েছে। তবে বেশ কিছু বিষয় এখনো আরো গুরুত্ব দিয়ে ভাবার সময় এসেছে । নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরেও এখনো দুটো ভারত চোখে পড়ে। একটা ধনীর ভারত, আর একটা গরিবের ভারত। একদিকে কলোনি এলাকা। অন্যদিকে আকাশচুম্বী ঝাঁ-চকচকে বহুতল। নেতাদের গাড়ি বাড়ির নিচে গরিবের যন্ত্রণা চাপা পড়ে থাকে। ঠিক যেভাবে বছর-দশেকের শিশুকে স্বাধীনতা সংগ্রামে বারাক স্কয়ারের ইতিহাস বাহি শহরেও এদিন খাওয়ার জন্য রাস্তায় লোকের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতে হয়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন না হলে জোটে না। উল্টে কারো কারো কাছে তিরস্কারও মেলে । তারই সম বয়সী বন্ধুরা হয়তো এই সময় কোনও স্কুলে স্বাধীনতার উদযাপনে সমবেত সঙ্গীতে গলা মিলিয়েছে। বাড়িতে রং তুলি দিয়ে জাতীয় পতাকা এঁকেছে। এবছর পৃথিবীর বাইরে মহাকাশেও 30 কিলোমিটার দূরে জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়েছে। সিকিমে 18000 হাজার ফুট উঁচুতে, গভীর জলে জাতীয় পতাকা টানানো হয়েছে। ওই পথশিশুদের বয়সি কোনও বাচ্চা তা শুনে সম্ভবত ভবিষ্যতে মহাকাশে নিজের হাতে তিন বর্ণের ওই পতাকা ওড়ানোর স্বপ্ন দেখেছে এদিন । কিন্তু, অবহেলিত পথশিশুরা সে সময় ভিক্ষা করে পয়সা বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া ছাড়া আর কোন ভাবনার অবকাশ পায়নি ।
হারিয়ে গেছে শৈশব। তাদের যেন স্বপ্ন দেখতে নেই। অনেকেই জানিয়েছেন, জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার সঙ্গে এই বৈষম্যের বিষয় তাঁদের যন্ত্রণা দেয়। ঠিক যেভাবে সোমবার সকালে বাসস্ট্যান্ড এর কাছে প্রাঙ্গন মার্কেটের সামনে দেখা গেল, আবর্জনার স্তূপ রাখা আছে। সেখানে চারটে মহিষ ওই আবর্জনা ছড়াচ্ছে। শহরের সেই ছবি দাঁড়িয়ে দেখছে চার শিশুর ছোট্ট একটা দল। জামা কাপড় নেই বললেই চলে। স্বাধীনতা দিবসের রংবেরঙের সাজসজ্জার উৎসবের আমেজে এই ছবি কি কাম্য? প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)