Durga Puja 2023: রঘুনাথগঞ্জের পেটকাটি দুর্গার নেপথ্যে রয়েছে কোন গল্প?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ মায়ের পায়ে শিকল বাঁধা। মুখে শাড়ির আঁচল। প্রতিমার পেটকাটা! দেবী এখানে পেটকাটি দুর্গা। মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে প্রাচীন জনপদ রঘুনাথগঞ্জ। সেখান থেকে ১০ কিলোমিটার গেলেই আহিরণ।

ঠিক তার পাশের গ্রাম গদাইপুর। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে আখরি নদী। এই নদীর তীর থেকে মাটি এনেই দেবীপ্রতিমা গড়া হয়। দৈর্ঘ্য ৯ ফিট ও চওড়ায় ১৩ ফিট। কয়েকশো বছর ধরে মাপের কোনও হেরফের হয়নি মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের ৪০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই দুর্গা পুজো নিয়ে নানান কাহিনি রয়েছে। ঐতিহ্যের টানে এবং পাশাপাশি বিশ্বাসের ওপর ভরসা করে আজও কাতারে কাতারে দর্শনার্থীরা আসেন।

পেটকাটি নাম কেন?
এই নাম করণের নেপথ্যেও রয়েছে নানান কাহিনি। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের, গদাইপুর গ্রামের এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে নানান ইতিহাস। দেবী এখানে পূজিতা হন পেটকাটি দুর্গা নামে। এই নামের নেপথ্যেও রয়েছে ইতিহাস।

লোকমুখে শোনা যায়, এই মন্দিরে এক সময় কৃষ্ণের মূর্তি থাকায় বলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবং সেই রাতেই পুরোহিতের এক কন্যা উধাও হয়ে যান। পুরোহিতকে স্বপ্নাদেশ দেন দেবী। পরদিন সকালে, প্রতিমার পেট কেটে বের করা হয় তাঁর কন্যাকে। সেই থেকে পেটকাটি দুর্গার পুজোয় কখনও বলি বন্ধ হয়নি।

এখনও দেবী প্রতিমার মুখে এক টুকরো কাপড় লাগানো থাকে। পায়ে বাঁধা থাকে শেকল। সেই প্রাচীন রীতি মেনে প্রতিমা তৈরির সময় কেটে রাখা হয় পেট। মুখে আটকানো শাড়ির আঁচল ওই কিশোরীকে খেয়ে ফেলার প্রতীক হিসাবে মনে করা হয়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতে সেই থেকেই দেবীর পায়ে প্রতীকী শেকল পরানো থাকে। এবং যদি দেবীর মুখ লক্ষ্য করা হয় তাহলে সেখানেও দেখা যাবে, দেবীর চোখ কিন্তু বেশ বড় বড়। এবং মায়ের গায়ের রং হলুদ।

দশমীর দিন আখরি নদীপথে নৌকো করে পেটকাটি দুর্গাপ্রতিমাকে আনা হয় জঙ্গিপুর সদর ঘাটে। এলাকার অন্যান্য দুর্গা প্রতিমাও আনা হয় সদর ঘাটে। বসে মেলা, চলে বাইচ। সব প্রতিমার সঙ্গে সাক্ষাতের পর একাদশীর দিন বেলা ১১টায় জঙ্গিপুর শ্মশানঘাটে প্রথমে পেটকাটি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। তার পর বাকি প্রতিমার নিরঞ্জন হয়।