নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ রবিবার সকালে বাজার করতে এসে রক্ত ঝরল এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছে বহরমপুরের স্বর্ণময়ী বাজারে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তি বাজার করতে এসে স্বর্ণময়ীর এক দোকান ঘরের সামনে তার বাইকটি রেখেছিলেন। তাই নিয়ে বাদানুবাদ শুরু। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাসন বিক্রেতা উত্তেজিত হয়ে দিব্যেন্দুর গলা লক্ষ্য করে ছুরি চালিয়ে দেন। একাধিকবার ছুরির আঘাত লাগায় প্রাণে বেঁচে গেলেও তাকে স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে দশ হাত দূরের মর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই এখন চিকিৎসাধীন দিব্যেন্দু। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত দোকানদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সব পক্ষের কথা শুনে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বহরমপুর থানার পুলিশ।
তবে প্রকাশ্য দিবালোকের এই ঘটনা ফের একবার শহরে গাড়ি পার্কিংয়ের অব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তুলল। স্বর্ণময়ী বাজারে পার্কিং জোন না থাকায় ক্রেতা বিক্রতার উভয়ের সমস্যা। বাজার লাগোয়া মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। অদূরে রেলস্টেশন। স্বাভাবিকভাবে সকাল থেকে রাত অবধি ওই রাস্তুায় টোটো , বাইক থেকে চার চাকার ব্যস্ততা লেগেই থাকে। সম্প্রতি বাজারের মধ্যে মন্দির নির্মাণ শুরু হয়েছে। তার ঠিক পাশেই চলছে বহুতল নির্মাণ। ফলে মাছের বাজার আর সব্জি বাজারের মাঝখানে বালি পাথর ঢাই করে রাখা থাকে সর্বক্ষণ। ফলে সেখানে জায়গা থাকা সত্বেও বাইক বা সাইকেল রাখতে পারেন না ক্রেতা।
আবার ঘেরা জায়গার বাইরে লটারির দোকান ছাড়াও আনাজের দোকান থাকায় সেখানেও বাইক বা সাইকেল রাখা দুষ্কর হয়ে ওঠে ক্রেতার। স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতা তার বাইক বা সাইকেল রাখার জন্য বেছে নেন স্থায়ী দোকানঘরের সামনের ফাঁকা এক চিলতে জায়গা। এই নিয়ে নিত্যদিন ঝামেলা চলে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে। পুজো এলে পুলিশ ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযান চালালেও বারোমাসের নিত্য ঝামেলা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে সেই পুলিশের প্রতিই, দাবি স্বর্ণময়ীর বাসিন্দা অমিতাভ সান্যালের। একই দাবি করেন স্থানীয় দোকান রাজেশ সাউ। তিনি বলেন, ” খরিদ্দারের কথা চিন্তা করে জায়গা ছেড়ে দিলেও খরিদ্দার নিজের জায়গা ভেবে খামখেয়ালিভাবে গাড়ি রেখে দিয়ে সমস্যা তৈরি করে।”
স্বর্নময়ী বাজার পরিচালনা করে অভ্যুদয় ক্লাব। নিত্যদিন বাজার পরিস্কার, নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ক্লাব থেকে দু-চারজন কর্মী নিয়োগ করা আছে বলে দাবি ক্লাব কতৃপক্ষের। তারজন্য প্রত্যেক আনাজ বিক্রেতার কাছ থেকে পাঁচ টাকা দশ টাকা এমনকি পঞ্চাশ টাকাও দৈনিক আদায় করা হয় ক্লাবের পক্ষ থেকে। কিন্তু এতবড় জনপ্রিয় বাজারে পার্কিং জোন নেই কেন? ক্লাবের পক্ষে কানাই মিশ্র বলেন, ” একটা পার্কিং জোন তৈরি করা হচ্ছে। তবে এইরকম ঘটনা প্রথম ঘটল। এটা উচিত হয় নি।” তবে বাজারের মধ্যে প্রোমোটারের পাথর বালি পড়ে আছে কি ক্লাবের অনুমতিতে? কানাই বলেন, ” কেউ সাহায্য চাইলে কি না বলা যায়? দিন কয়েকের মধ্যেই ওই বালি, পাথর সরিয়ে নেওয়া হবে।”