নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ মিটেছে শারদ উৎসব। তবে কাটেনি উৎসবের রেশ। কার্ত্তিক মাসের সংক্রান্তির দিন মহা সমারোহে শহর বহরমপুরে ভৈরব পুজো হয়ে থাকে। আর এই ভৈরব পুজোকে ঘিরে শহরের মানুষের উন্মাদনা দেখা যায় চোখে পড়ার মতো। প্রতি বছরের মতো এবছরেও শুক্রবার খাগড়ার ভৈরবতলায় দেখা গেল মানুষের উচ্ছ্বাস। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দর্শন করতে এসেছেন বহু দরশনার্থী। প্রায় ১৪৯ বছর ধরে খাগড়া ভৈরবতলায় এই পুজো হয়ে আসছে। এলাকার প্রাচীন মৃৎ শিল্পী মধুসূধন মিস্ত্রীর বানানো ধাঁচেই প্রায় ২০ ফুটের ভৈরব মূর্তি। পুজোর উদ্যোক্তারা জানান জাগ্রত এই ভৈরব তার টানেই শহর তথা জেলার দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দরশনার্থিরা।
মৌমিতা বিশ্বাস যিনি প্রতি বছরই আসেন এবারও এসেছেন বহরমপুরের ভৈরবতলায় পুজো দিতে। তিনি জানান, ‘প্রায় দুপুর ২ থেকে আমি এই লাইনে দাড়িয়ে রয়েছি। একটু একটু করে লাইন এগোচ্ছে। আগের বছরের তুলনায় এই বছরে আরও বেশি পরিমাণে মানুষের সমাগম বেড়েছে।’ পুজোর বিষয়ে বলেন, ‘যেহেতু বিকেল ৫’টার পর এই বছরের পুজো বসবে তাই এতক্ষন লাইনে দাড়িয়ে। কারণ একবার দেড়ি করে আসলে মাঝরাতের আগে আমার পুজো দেওয়া হবে না।’
যেহেতু প্রতিবারের মতন এই বছরও মানুষের সমাগম অনেকখানি তাই ক্লাব কর্তৃপক্ষদের সামলাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। এমনটাই জানালেন খাগড়া ভৈরবতলা পুজো কমিটির সহ সভাপতি রাহুল দেব রায়, ‘আমাদের পুজো যেহেতু বহু প্রাচীন প্রায় ১৪৯ বছরের ফলে শুধু শহরতলীর মানুষ নয়, গোটা জেলা তথা জেলার বাইরের ভক্তবৃন্দরা আসেন পুজো দিতে। এই বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। এবারের পুজো যাতে সুস্থভাবে সম্পূর্ণ হয় তার জন্যে আমরা স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা অনেকখানি বাড়িয়েছি। যেহেতু প্রতিবারের মতন এবারও সোনা-চাঁদি ভক্তরা দান করেন মনকামনা পূরণ হয়েছে বলে। সেই সমস্ত যাতে চুরি না যায় তার জন্যে সর্বদা ৪-৫ জন খেয়াল রাখবেন দিন-রাত।’
বহরমপুরের ভৈরব পুজো একটি ঐতিহ্যময় উৎসব। দুর্গা পুজো, কালী পুজোর পর শহরবাসী অধীর আগ্রহে ২০ ফুট লম্বা এবং ৬ ফুট চওড়া বাবা ভৈরবের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। এবং বাবা ভৈরব যে সবার কথাই শোনেন, এমনই দাবি করেন ভক্তবৃন্দরা।