মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ পাঁচ পেরোল ইমাজিন। ইমাজিন কমিউনিটি মিডিয়ার ৫ বছর পথ চলা উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে ছিল আলোর পথ বেয়ে অমৃতের আহ্বান। অমৃত সত্যের পথে থাকার । ইমাজিন কমিউনিটি মিডিয়া সংবাদে সত্যনিষ্ঠ, দর্শক, শ্রোতা, পাঠকের কাছে দায়বদ্ধ । আঙ্গিকে আধুনিক, পরিবেশনে অননুকরণীয় । এই পথচলায় সঙ্গীরা উপস্থিত ছিলেন ১৮ ই সেপ্টেম্বর বহরমপুরের জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে।
এ বছরের ইমাজিন – এর মূল উদ্দেশ্য ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কৃতিদের খুঁজে এনে তাঁদের সম্মানিত করা ‘মধ্যবঙ্গের শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান’ – এ। ।
দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে জেলার কৃতিদের স্মারক পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেখানে সম্মানিত করা হয় জেলার প্রবীণ আলকাপ শিল্পী শ্রী করুণাকান্ত হাজরাকে । আলকাপ একটি বিলুপ্তপ্রায় লোক শিল্প মাধ্যম, তা নিয়ে কাজ করার জন্য করুণাকান্ত মহাশয়কে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মানে ভূষিত করা হয় ইমাজিন -এর তরফে। তাঁকে সম্মান প্রদানের জন্য মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক তথা জেলা মেডিক্যাল কলেজের MSVP ডা. অমিয় কুমার বেরা। তিনি জেলার তৎকালীন অবস্থার কথা যেমন তুলে ধরেন । সাথে ঐতিহাসিক ভাবে সমৃদ্ধ এই জেলা নিয়ে তাঁর গর্বের অনুভূতিকেও তিনি চেপে রাখেননি। তিনি একাধারে প্রাচীন সইদাবাদে নাট্য বিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করেন সাথে সবার প্রিয় ব্যারাক স্কোয়ারের ইতিহাসও আলোচনা করেন । কথা প্রসঙ্গে ডা. বেরা মিডিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “Media controls a mind, বিকৃত খবরের প্রতি মাথা না ঘামিয়ে জেলার সংবাদ মাধ্যম হিসাবে ইমাজিন যেভাবে নিরপেক্ষভাবে জেলার খবর জেলার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে, সেই জন্য ইমাজিনকে ধন্যবাদ জানাই।“
‘মনোবীক্ষণ লাইভ’ হল ইমাজিন টিভির একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। এই প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন ডা. রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী ও ডা. অরুনিমা চট্টোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা জেলা তথা রাজ্যের বিভিন্ন মানুষের শারীরিক ও মানসিক রোগের বিষয়ে ও সেই রোগের উপশমের বিষয়ে টেলিফোনে কথাবার্তা বলেন। এই অনুষ্ঠানটি জেলার অন্যতম জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। মানুষের হিতের জন্য ৫ বছর ধরে এই অনুষ্ঠান চালিয়ে আসছেন তাঁরা। ইমাজিন তাঁদেরকেও প্রদান করেছে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান। তাঁদের স্মারক প্রদান করতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিষ সুর। তিনি বলেন, “মানুষ কী করতে পারে তা সে নিজে জানে না। করতে করতে জানে।“ স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ইমাজিন -এর এই সম্প্রচার অনুষ্ঠানকে তিনি সাধুবাদ জানান।
মধ্যবঙ্গ শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান পেয়েছে কান্দির বৈদ্যনাথপুরের আলম। পুরো নাম মহম্মদ আলম রহমান। এই বিশেষ স্কুল পড়ুয়া জন্মগতভাবে দুটি অকেজ হাত নিয়ে জন্মেছেন। তবু তাঁকে দমিয়ে রাখবে সাধ্যি কার? পা-এর ওপর ভর করেই জীবনের একের পর এক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে সে। মাধ্যমিকে করেছে চমকপ্রদ ফলাফল। তাঁর ইচ্ছে মহাকাশ নিয়ে গবেষণা। তাঁকে পুরস্কৃত করতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথিরা সকলেই।
শতবর্ষ পেরিয়ে আসা কান্দি বান্ধবকে মধ্যবঙ্গের শ্রেষ্ঠত্বের সম্মানে সম্মানিত করা হয় বুধবার। মঞ্চে ছিলেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস শুর, মুর্শিদাবাদ জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস, প্রবীণ সাংবাদিক প্রাণময় ব্রহ্মচারী।
বহরমপুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিদের নিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি নাটক মঞ্চস্থ করছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। অপরাধের আড়ালে চাপা পড়ে থাকা কয়েদিদের জীবন সত্যকে খুঁজে চলেছেন তিনি। বন্দিদের মুক্তির স্বাদ দিচ্ছেন। নাটকের কলাকুশলীরা হয়তো সমাজে বড় কোনও অপরাধ করে এসেছেন । কারাগারের অন্ধকার দেওয়ালের চৌহদ্দির মধ্যে তাঁদের জীবন কাটে। কারাগার তো সংশোধনাগার। সেখানে থিয়েটার থেরাপির মাধ্যমে, সংস্কৃতির কাজের মাধ্যমে অবসাদগ্রস্ত জীবনকে উজ্জীবিত করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন থিয়েটার জগতের এই বিশিষ্ট মানুষটি। প্রদীপ ভট্টাচার্যের ‘জেল জীবন’কে কুর্নিশ জানায় ইমাজিন কমিউনিটি মিডিয়া।
দেখানো হয় জ্ঞানতাপস ডঃ জহর সেন’কে নিয়ে তৈরী একটি ভিডিও। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছিলেন জহর সেন । স্কুল জীবন থেকে জড়িয়েছেন রাজনীতিতে। ১২ দিনের আইনের পেশা ছেড়ে ডায়মান্ডহারবারের ফকির চাঁদ কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন যুবক বয়সে। ১৯৫৭ সালে যোগদেন কৃষ্ণনাথ কলেজে। সেই শুরু। পড়িয়েছেন কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ, দার্জিলিং গভর্নমেন্ট কলেজ, বারাসাত গভর্নমেন্ট কলেজ, টাকি গভর্নমেন্ট কলেজ সহ নান প্রতিষ্ঠানে। সাথেই চলেছে পড়াশোনা, গবেষণা। ১৯৭৪ সালে পেয়েছেন পিএইচডি উপাধি।
১৯৯২ সালে অবসর নিলেও । তাকে অবসর দেয় নি বিশ্ব বিদ্যালয়। যুক্ত থেকেছেন পড়াশোনা, গবেষণার সাথে। ২০০৯ সালে শিক্ষকতা, গবেষণা ও গবেষণা পরিচালনায় তার অবিস্মরণীয় কৃতিত্বের স্মীকৃতিতে তাঁকে ইমিনেন্ট টিচার শিরোপা দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এখনো ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে আশ্রয় তিনিই।
এখন তার পড়াশোনার বিষয় , গান্ধী। এখনও বিশ্বাস করেন রাজনীতিতে দরকার পড়াশোনা।
মধ্যবঙ্গের মধ্যবঙ্গের শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্টে আপনাকে সম্মানিত করতে পেরে আমর গর্বিত।