চোখের সামনে তাসের ঘরের মতো ধ্বসে যাচ্ছে বাড়ি, হাহাকার সামসেরগঞ্জে

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মাসুদ আলি, সামসেরগঞ্জঃ ফিরল পুরনো স্মৃতি। ধানঘরার, কামালপুরের মতো আবার ধ্বংসলীলা শুরু হল সামশেরগঞ্জের মহেশতলা, প্রতাপগঞ্জ সহ এলাকায়। চোখের সামনে  তাসের ঘরের মতন ভেঙে যাচ্ছে সারি সারি বাড়ি। কোথাও একতলা বাড়ি তো কোথাও বা আবার দোতলা পাকা বাড়ি। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে নিজেদের হাতে তৈরি করা মাথা গোঁজার ঠিকানা, স্বপ্নের মহলগুলি। রাতের পর রাত আতঙ্কে কাটাচ্ছেন সামশেরগঞ্জের মহেশতলার এলাকার বাসিন্দারা।

রবিবার এই এলাকায় সকাল বেলায় পরপর ৫টি বাড়ি ধসে যায়। এই এলাকার বাসিন্দা চন্দনা দাস জানান, ‘আজ থেকে ১৫দিন আগেই শৌচাগার ধসে যায়। এবং তারপর থেকেই ধীরে ধীরে আতঙ্ক বাড়তে থাকে। এই যেকোনো মুহূর্তে বাড়িটাও হয়ত তলিয়ে যাবে নদী বক্ষে’। এবং সেই আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই আজ সকালেই ধসে যায় চন্দনা দাসের বাড়ি।

এলাকায় বেশিরভাগ মানুষই বিড়ি তৈরি করার কাজ করেন। অনেকেই কাজ করেন পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে। এইরকম  অবস্থায় যেখানে একদিন কাজে না গেলে টাকা আসবে না ঘরে। সেখানে অসহায়ভাবে রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন এই মানুষগুলি। কারোর কারোর বাড়িতে হয়ত স্বামী নেই,  কাজ করতে গিয়েছে ভিন রাজ্যে। একা হাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বউ রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন ভবিষ্যতের চিন্তা নিয়ে।

 এলাকার বাসিন্দা বদরুল শেখ জানান, “আতঙ্কে ঘুম আসছে না রাতে। প্রশাসনের তরফ থেকে সাহায্যের নামে পেয়েছি কেবল ত্রিপল। সময় করে ঘড়ের জিনিসপত্র বার করে এনেছিলাম নইলে রাতের বেলায় ঘুমিয়ে থাকলে। বউ বাচ্চা নিয়ে আমরাও ধসে যেতাম নদীতে”।

কেবল অসহায়তা নিয়ে নিজেদের জীবন কাটাচ্ছেন সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাকার বাসিন্দারা। কোথাও কারোর চোখে ঘুম নেই। নিজের হাতেই ভাঙছেন নিজেদের বাড়ি। যাতে ক্ষয়ক্ষতি হার কম হয়। সামশেরগঞ্জের গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কিছুদিন আগেই এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। নদীবক্ষে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর থেকে সমস্ত জমিজমা। গত ৫ই মে সামশেরগঞ্জের ভাঙন মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকার অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুরু হয়নি ভাঙন রোধের স্থায়ী কাজ। যদিও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।