Murshidabad Head Master Death Case ‘আমার স্বামীকে মেরে ফেলল ওরা’, রানীনগর থানা চত্বরে কান্নায় ভেঙে পরলেন মৃত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী পলি সিংহরায়

Published By: Imagine Desk | Published On:

‘স্কুলের সরকারি টাকা থেকে ৩৫ লক্ষ দাবি’, চাপেই আত্মহত্যা প্রধান শিক্ষকের? অভিযোগের তির তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে, সরগরম মুর্শিদাবাদ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ‘আমার স্বামীকে মেরে ফেলল ওরা’। মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে কথা বলতে পারছেন না সদ্য স্বামীকে হারানো মুর্শিদাবাদের বাবুলতলি খলিলুর রহমান বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী পলি সিংহরায়। কান্নায় ভেঙে বারবার বলে চলেছেন, ‘৩৫ লক্ষ টাকার জন্যে মেরে ফেলল। চাপ দিয়ে বলেছিল ওই টাকা সময়ে না দিলে টাকার অংক আরও বাড়বে’। টাকা দিয়ে স্কুল শিক্ষকের চাকরি পাওয়া কাণ্ডের রেশ এখনও চলছে। এবার স্কুলের সরকারি অনুদানের টাকা থেকে ৩৫ লক্ষ দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে প্রবল চাপ দেওয়ার ঘটনার অভিযোগ। অভিযোগের তির স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা আইনাল হকের বিরদ্ধে। তবে রানীনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আইনাল, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। চর্চা শুরু হয়েছে, এবার তৃণমূলের লোভের শিকার প্রধান শিক্ষক? ঘটনায় সরব হয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। আলোড়ন মুর্শিদাবাদে

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শেষমেষ টাকার দাবির চাপ সামলাতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন প্রধান শিক্ষক। বাড়িতে ছাত্রদের পরাতে পরাতে আচমকাই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি।  মঙ্গলবার সকালে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগরের মালিপারা গ্রামে। মৃতের নাম উজ্বল সিংহরায়। তিনি রানীনগর শেখ পাড়া বাবুলতলি খলিলুর রহমান বিদ্যানিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের BKRV School ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়। 

Murshidabad Head Master Death Case পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে টিউশন পরাচ্ছিলেন তিনি। পরে ঘরে ঢুকে যান। এরপর দীর্ঘ সময় ঘর থেকে না বেরনোয় ছাত্ররা ডাকাডাকি করে। সাড়া না পেয়ে তারা  প্রতিবেশীদের ডাকে। পরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। মৃতের স্ত্রী পলি সিংহরায়ের অভিযোগ, স্কুলে সরকারি অনুদান থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরা ও কয়েকজন মাস্টার মশাই । তা না দিলে চুরির অভিযোগে ফাঁসানো হবে বলা হয়। এর আগে চাল নিয়ে সমস্যা করা হয়েছিল। প্রশাসনের অর্ডার ছিল, তবুও চাল চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। সংবাদ মাধ্যমকে জানাবে বলে জানানো হয়। স্বামীর মৃত্যুর জন্যে যারা দায়ী তাদের শাস্তি চাই। ইতিমধ্যে মৃত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় সরগরম মুর্শিদাবাদের রাজনীতি। বিধানসভা ভোটের মুখে এই ইস্যুতে হাতে চাঁদ পেয়েছেন বিরোধীরা। তাঁরা এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

Murshidabad Head Master Death Case মৃত প্রধান শিক্ষকের কাকা শশাঙ্ক সিংহরায়ের বক্তব্য, দিন দশেক আগে উজ্বল আমার কাছে এসেছিল। সে বলল, স্কুলে নতুন ম্যানেজিং কমিটি হয়েছে সেখানে কমিটি ও কয়েকজন শিক্ষক মিলে আমার উপর প্রচণ্ড অত্যাচার করছে। মানসিক চাপ দিচ্ছে। চাল নিয়ে চোর-চোর বলে হেনস্তা করছে। এটা নিয়ে আইনাল হকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তিনি বলেন, আমি কিছু করতে পারব না। স্থানীয় বিধায়ক করতে পারবেন। বিধায়কের কাছে গিয়ে লাভ হয়নি। স্কুলে গেলে চোর বলা হয়েছে। ক্লাস করাতে পারেনি। সেটা মেনে নিতে পারেনি। পরিচালন সমিতি ছাড়াও ৪-৫ জন শিক্ষক আছেন। পরে সব বলব। অভিযোগ করব।