মামিনুল ইসলামঃ গ্যাসের দাম থেকে ভোজ্য তেল, সব্জি থেকে ডিম – সবকিছুর দাম এখন মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোপ পড়েছে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের হেঁসেলেও । সরকারি হিসেবে ছাত্র পিছু ৪ টাকা ৯৮ পয়সা বরাদ্দ মিড ডে মিল বাবদ । কিন্তু বাজারের এই দর নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা । শিশুদের কথা ভেবেই অগত্যা বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছে হরিহরপাড়ার এক স্কুল । মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ট্যাংরামারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড ডে মিলের পুষ্টি বজায় রেখে অভিনব পথ বেছে নিয়েছে । স্কুলের নির্দেশে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ির আশপাশ থেকে নিয়ে আসছে সবুজ শাক। সবুজ শাক পাতা দিয়েই হচ্ছে মিড ডে মিলের খাবারের ব্যবস্থা।
মিড ডে মিল রাঁধুনি নীলিমা বিবি জানান, তরকারির দাম খুব বেশি হয়ে যাওয়াতেই এইভাবে পুষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে, স্কুলে চাষ করা শাক সবজিও।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অসীম অধিকারী বলেন, এতে একতা বাড়ছে স্কুলের শিশুদের মধ্যেই। উদাহরণ দিয়ে বলছেন, কয়েকজনের বাড়িতে লেবুগাছ আছে। তারা লেবু নিয়ে আসছে। একটা লেবু কেটে দেওয়া হচ্ছে চারজনের পাতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, ” স্কুলে ১৪৭ জন ছাত্রছাত্রী। নিয়মিত স্কুলে আসে প্রায় সকলেই। সপ্তাহে একদিন ডিম খাওয়ানো এখন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে । বাড়ির আশেপাশে থেকে শাক পাতা তুলে নিয়ে আনছে স্কুলের পড়ুয়ারা । গ্রামে অনেক শাক পাতাই কিনতে হয় না। গ্রামেই বাড়িরতে পাওয়া যায়। শাক পাতা তুলে দিচ্ছেন মায়েরাই। আর তা দিয়েই হচ্ছে রান্না” । পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প জোগান এভাবেই দিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ডাল, তরকারির সাথে সপ্তাহে একদিন দেওয়া হচ্ছে সয়াবিন । সপ্তাহে একদিন ডিমের বদলে মাসে দুদিন দেওয়া হচ্ছে ডিম। ছাত্রছাত্রীরা নিয়ে আসছে পুঁইশাক, সজনে শাক, কচুর শাক। সবার শাক মিলিয়ে রান্না হয়।
তবে প্রধান শিক্ষক বলছেন, কোনরকমে যোগান দেওয়া হচ্ছে কিন্তু এভাবে চলবে কতদিন? স্কুলের দায়িত্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর খাদ্যমন্ত্রী খুদে মন্ত্রীাও চাইছেন পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হোক । সপ্তাহে একদিন পাতে পড়ুক ডিম। কচিকাঁচাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই চালু হয় মিড ডে মিল ব্যবস্থা । যদিও অগ্নি মূল্য বাজারে সরকার নির্ধারিত অর্থে মিড ডে মিলের খাবার নিয়ে দিন দিন চিন্তা বাড়ছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। অল্প টাকায় আর কতদিন এভাবে সামলাবেন? স্কুলের প্রধান শিক্ষক অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।