‘ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে গুজরাত সরকার’ বিলকিস বানো ধর্ষণকান্ডে দোষিদের ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে জানাল শীর্ষ আদালত

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজডেস্কঃ বিলকিস বানো ধর্ষণকান্ডে আরও একবার মুখ পুড়ল বিজেপির। ২০২৩সালে স্বাধীনতা দিবসের আগেই  বিলকিস বানু ধর্ষণকান্ডে জড়িতদের সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১১ জন দোষীকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল গুজরাত সরকার। এমনকি জেল থেকে বেড়নোর পর অপরাধীদের বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয়েছিল। যা অবাক করেছিল গোটা দেশকে।  সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ফের মামলা হয় শীর্ষ আদালতে।সেই মামলার রায়ে সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে গুজরাত সরকার’। একইসঙ্গে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে দোষীদের জেলে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ ও দিয়েছে দুই বিচারপতির ডিভিসন বেঞ্চ। গুজরাট সরকারের সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত সরকারের দেওয়া নির্দেশ এদিন খারিজ করে জানিয়েছে, রাজ্যের অপরাধীদের  সাজা মুকুবের ক্ষমতা সেই রাজ্য সরকারের নেই।একই সঙ্গে এই মামলায় ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশের উপর ভিত্তি করে গুজরাত সরকার দোষীদের মুক্তি দিয়েছিল সেই নির্দেশও এদিন বাতিল করেছেন বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ও উজ্জল ভুঁয়া। তাঁদের পর্যবেক্ষণ ১৯৯২ সালের একটি আইনের পথ ধরে ভুয়ো ও অসত্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে সেদিন ওই রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। আর তা জানা সত্বেও গুজরাট সরকার সেই রায়ের বিরুদ্ধে  কোনও আবেদন করে নি। যা বিচারপতিদের অবাক করেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সারা দেশের কাছে উদাহরণ তৈরি করেছে গুজরাত সরকার।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময় অন্তস্বত্তা বিলকিস বানুকে গণধর্ষণ করা হয়। হত্যা করা হয় তাঁর স্বামী সহ তিন বছরের এক সন্তানকেও। সেই মামলার শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। প্রমাণের অভাবে বাকি সাত জন বেকসুর খালাস পান। পরে শুনানি চলাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। বন্দি অবস্থায় তাদের ভালো ব্যবহারের জন্য তাদের সাজার মেয়াদ কমানোর যুক্তি দেখিয়ে মুক্তি দেয় গুজরাত সরকার।

সেই সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন বামনেত্রী শুভাসিনী আলী, অধ্যাপক রূপলেখা ভার্মা, সাংবাদিক রেবতী লাল ও তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিলকিস নিজেও দোষীদের খালাস করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সোমবার জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ শুধু মুক্তি দেওয়াই নয়, দোষীদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে। আর বিলকিস বানু স্বামী সন্তান হারিয়ে উৎকন্ঠায় দিন কাটায়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে অকপট সমর্থন ও সম্মান জানাচ্ছি। আদালতের এই সিদ্ধান্ত নৈতিক জয়ের পাশাপাশি আইনেরও জয় হল।”