নিজস্ব সংবাদদাতা, বড়ঞাঃ এবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতির অপসারণের দাবি মুর্শিদাবাদের বড়ঞায়। অপসারণের দাবিতে বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা মাহে আলম। ১৭ জানুয়ারি বড়ঞা দক্ষিণ ব্লকের সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছে সমীরণ মন্ডল। তার পরেই শুরু হয় বিদ্রোহ। ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ করেছে বিদ্রোহীরা। নেতৃত্বে বড়ঞার তৃণমূল নেতা মাহে আলম। মাহে আলমের হুঁশিয়ারি, নতুন ব্লক সভাপতিকে মান্যতা দেবেন না তাঁরা।
তৃণমূল নেতা মাহে আলম জানান, “একটি অরাজনৈতিক ব্যাক্তিকে বর্তমানে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে। যখন বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়। তখন আমাদের সংখ্যা ছিল ২১ জন। আমাদের মেজরিটি থাকা সত্ত্বেও ৫ জন মেম্বারকে নিয়ে চলে যায়। বিরোধীদলের একাধিক কর্মাধ্যক্ষ এই পঞ্চায়েত সমিতিতে রয়েছে। আমরা দলকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে এখনও কোনরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি।”
আগেই সমীরণ মণ্ডলের অপসারণ চেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখেছেন ৬ টি পঞ্চায়েতের প্রধানরা। তৃণমূল চেয়ারপার্সন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির ১৬ জন সদস্য। লিখিত অভিযোগের পরেও কেন ব্যবস্থা নয়? প্রশ্ন তৃণমূলের একাংশেই। এই বিষয়ে মাহে আলম জানান, “অরাজনৈতিক ব্যাক্তিকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে। আমরা দলের কাছে আবেদন রাখছি। যত দ্রুত সম্ভব ওনাকে অপসরান করান হোক। যদি না হয় তাহলে পরবর্তীতে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
দিন দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদ জেলা সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় নয়া ব্লক সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল। সেই তালিকা অনুযায়ী মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের দুই সাংগঠনিক জেলাতেই রদবদল হয়েছে। কিন্তু যে কোন্দল ঠেকাতে একাধিক ব্লকে সভাপতি বদল হয়েছে, নতুনদের নাম প্রকাশের পরেও তা থামার লক্ষণ নেই। মুর্শিদাবাদ জেলার নেতাদের সঙ্গে ‘দিদি’র বৈঠকের মাঝেই ব্লক সভাপতি বদলের দাবি জানিয়ে তৃণমূলের উঁচু মহলে চিঠি দিল বিক্ষুব্ধরা।
ক্ষোভের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে বড়ঞা ব্লক। তৃণমূল প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী এই ব্লককে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে তিন জনকে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বড়ঞা উত্তরের সভাপতি করা হয়েছে গোলাম মোর্শেদ জর্জকে। আর সহ সভাপতি করা হয়েছে মাহে আলমকে। দক্ষিণের সভাপতি করা হয়েছে সমীরণ মন্ডলকে।
এর আগে অখণ্ড বড়ঞা ব্লকে সভাপতি ছিলেন রবীন ঘোষ। তিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেল বন্দি বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার ঘনিষ্ঠ বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। বিধায়কের অনুপস্থিতিতে এলাকা দেখভালের জন্য চার জনের যে কমিটি তৈরি করে দিয়েছিল তৃণমূল, সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন রবীন। যদিও সেই রবীন ‘বিজেপির সঙ্গে আঁতাত’ করে চলত বলে অভিযোগ ছিল বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীর। তবুও তাঁকে সরিয়ে বর্তমান জেলা সভাপতি ঘনিষ্ঠ সমীরণ মন্ডলকে নিয়ে আসায় জীবন ঘনিষ্ঠদের কন্ঠে আক্ষেপ ঝড়ে পড়ছে।