রামচন্দ্র বিশ্বাস ও মামিনুল ইসলাম, বেলডাঙ্গা ও হরিহরপাড়াঃ কথায় আছে অকাল বোধন। তবে অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যবঙ্গের সব্জিচাষ। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে টানা বৃষ্টিতে বিপুল ক্ষতির মুখে হচ্ছে মুর্শিদাবাদের সবজি চাষীরা। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গা থেকে হরিহরপাড়া সহ বিস্তীর্ণ এলাকা মূলত সব্জি চাষের জন্য খ্যাত। কিন্তু এবার এই লাভের মুখ দেখতে পাবেন না বলে আশঙ্কা এই বিশাল এলাকার সবজি চাষিদের।
চাষিরা শসা, পটল, লাফা, বোরা থেকে শুরু করে ফুলকপি, ধনেপাতা বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি কলাই চাষও করেছিলেন জমিতে। কিন্তু এই অকাল বৃষ্টির জেরে বিপুল ক্ষতির মুখে চাষিরা। সব্জি থেকে ডাল শস্য সবেতেই লোকসান বলছেন চাষিরা। বেলডাঙ্গার এক কৃষক সুজিত মণ্ডল বলছেন, অকাল এই বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে সব শেষ হয়ে গেল। প্রায় হাজার দশেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেল পুজোর আগে।
এবছর ধানের খরার বছর। পাটেও লাভের মুখ দেখতে পেলেন না চাষিরা। এরপরে টানা বৃষ্টিতে জলের তলায় চাষের জমি। বৃষ্টিতে সবজি মাঠে মারা গেল। অকাল বৃষ্টিতেও সবজি চাষে বিপুল ক্ষতির মুখে পরে সরকারী সাহায্য চাইছেন চাষিরা। লাগাতার বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় চাষের জমি চলে গিয়েছে জলের তলায়। বৃষ্টির জেরে মাথায় হাত পড়েছে হরিহরপাড়ার দস্তুরপাড়া এলাকার সবজি চাষিদের। হরিহরপাড়ায় সবজি চাষ মানেই সবার প্রথমে আসে দস্তুরপাড়ার নাম। এই এলাকার মাঠে চাষিরা মূলত সবজি চাষের উপরেই নির্ভর করে। সারা বছরই তাঁরা সবজি চাষই করেন। তবে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সবজির জমি কার্যত জলের তলায়। সবজি বাজারে আসার আগেই বৃষ্টিতে সব কিছু মাঠে মারা গেল।
হরিহরপাড়ার দস্তুরপাড়ার এক সবজি চাষি আনারুল মণ্ডল জানিয়েছেন, “জমিতে ফুলকপির বাজারে তোলার মতো হয়ে গিয়েছিল। জমিতে জল জমে যাওয়ায় সেই কপি নষ্ট হতে বসেছে। অন্যদিকে ধনের জমিতেও জল জমে ক্ষতি। বৃষ্টির জেরে বাজারে যোগান কমছে সব সবজির। এমন ভাবে আর কয়েক দিনে বৃষ্টি হলে বাজারে সবজির দাম যে আবার আকাশ ছোঁয়া হবে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হলে রোদ ঝলমল করলেই জমির অবশিষ্ট সবজি টিকবে কীভাবে তা নিয়েই চিন্তায় ঘুম উড়েছে চাষিদের।”
এই বিষয়ে বহরমপুর মহকুমা কৃষি আধিকারিক আনিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টি প্রকৃতির খেয়াল এই বিষয়ে আমাদের কারও হাত নেই। এই অকাল বর্ষা সব্জি চাষিদের জন্য দুর্ভাগ্যের। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে সবজি বাঁচাতে জমিতে জল বাইরে বের করার পাশাপাশি জমিতে ছত্রাক নাশক প্রে ব্যবহার করা উচিত।