এখন খবরমধ্যবঙ্গ নিউজপরিবেশবিনোদনহেলথ ওয়াচখেলাঘরে বাইরেলাইফস্টাইলঅন্যান্য

বহিস্কৃত মহুয়াই কৃষ্ণনগরে বিজেপির ভোট প্রচারের হাতিয়ার, গুরুত্ব দিচ্ছে না বাম-কংগ্রেস

Published on: December 11, 2023

বিদ্যুৎ মৈত্র, কৃষ্ণনগরঃ সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ‘এথিক্স’নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তার সাংসদ পদ বাতিল হয়ে যায় শুক্রবার। তাঁকে সংসদ থেকে বহিস্কার করা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে নতুন কোনও শাস্তি ঘোষণা করা হয়নি। আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন কি পারবেন না সে প্রশ্ন এখনও ঝুলছে লোকসভার বারান্দায়।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবার কৃষ্ণনগর আসন থেকে ঘাসফুলের প্রার্থী হয়েছিলেন মহুয়া। করিমপুরের প্রাক্তন এই বিধায়ক  সেবার ৬৩ হাজার ২১৮ ভোটে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কল্যাণ চৌবেকে হারিয়েছিলেন। এই লোকসভায় সাতটি বিধানসভা আসন।  সেবার নারী পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোট পড়েছিল ১৩ লক্ষ ৬১ হাজার ৩৩১টি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন লোকসভা নির্বাচনে মহুয়া ফের প্রার্থী হবেন কৃষ্ণনগর থেকেই। আর সেই মহুয়াকেই পাল্টা হাতিয়ার করে কৃষ্ণনগরের জনমত পক্ষে টানতে পথে নেমেছে বিজেপি। আর তাই শনিবার থেকেই কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন জেলা নেতারা।

কৃষ্ণনগর (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “মহুয়া দেশের সুরক্ষা নষ্ট করে দেশদ্রোহী হিসেবে গোটা দেশের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁকে যতই বীরের সম্মান দিক না কেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ তাঁকে ক্ষমা করবে না।” তিনি আরও বলেন, “ মানুষের কাছে এটা পরিস্কার হয়ে গিয়েছে তৃণমুলের তাপস পাল কিংবা মহুয়া মৈত্র কেউই কিছুই করেন নি তাঁদের জন্য। কিন্তু এলাকায় এলাকায় বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ জুলু বাবুর (সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়) নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।” লোকসভা নির্বাচনের আগে এই অস্ত্রেই শান দিচ্ছে গেরুয়া শিবির।  তবে অর্জুনকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন কৃষ্ণনগর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমুল সভাপতি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এত উচ্চশিক্ষিত একজন মহিলা সাংসদের ইংরেজী কথা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল বিজেপির। তাই নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে দোষগুণ বিচার না করেই তাঁকে বহিস্কার করেছে সংসদ থেকে।”

তবে তার ফলে “শাপে বর”ই হয়েছে তৃণমুলের, মনে করেন সঞ্জয়। তিনি বলেন, “এলাকার মানুষ জানেন  সাংসদ শত ব্যস্ততাতেও তাঁদের পাশে থাকেন। এবারও নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জিতে সংসদে যাবেন।”কংগ্রেস অবশ্য মহুয়া বহিস্কারে তৃণমুল-বিজেপি আঁতাতই দেখছে। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অসীম সাহা বলেন, “ বিষয়টা ধোঁয়াশার। বিজেপি সত্যিই যদি তৃণমুলকে হারাতে চাইত তাহলে ওঁকে অত গুরুত্ব দিত না তারা। আর দু-মাস পরেই তো সাংসদ পদ চলে যেত স্বাভাবিক নিয়মে। বিজেপির সেই বাজার থাকলে  মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে না দিয়ে তাঁকেই উল্টে ফোকাসে নিয়ে এল।”

তবে কংগ্রেসের প্রাক্তন “আম আদমি কা সিপাহি” মহুয়ার সাংসদ পদ থাকলো কি গেল তাতে কংগ্রেসের কিছু আসবে যাবে না বলেই মত অসীমের। একইভাবে সিপিএমও মহুয়া কান্ডকে আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে জানান দলের জেলা সম্পাদক সুমিত দে। তিনি বলেন, “ হাজার একটা ইস্যু আছে ভোটের প্রচারে। মহুয়া মৈত্রের কান্ড আলাদা কোনও ইস্যু নয়। তবে যে পদ্ধতিতে তাঁকে বহিস্কার করা হয়েছে সেটা অনৈতিক।” এদিকে মহুয়ার পক্ষ নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমুলকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছে সিপিআইএম (লিবারেশন)। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও তারা মহুয়ার বহিস্কারের প্রতিবাদে কৃষ্ণনগরে গণকনভেশন যে করবেন দলীয় স্তরে তা একপ্রকার নিশ্চিত বলেই দাবি সূত্রের।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now