বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ পয়লা ফেব্রুয়ারি ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা কর্মসূচিতে মুর্শিদাবাদে আসছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু এবার আর ছানাবড়া খাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই কংগ্রেস সূত্রে খবর। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে পরপর দুবার লোকসভা ভোটের প্রচারে এসেছিলেন রাহুল গান্ধী। তারমধ্যে একবার বহরমপুরে এফ ইউ সি মাঠে সভা ছিল তাঁর। সেবার বহরমপুর টেক্সটাইল কলেজ মোড়ের মিষ্টির দোকানে বসে ছানাবড়া খেয়েছিলেন। সেই ছবি বাঁধিয়ে দোকানে টাঙিয়ে রেখেছেন ওই মিষ্টির দোকানের মালিক অরুণ দাস।
এদিন তিনি বলেন, “প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দোকানে এসেছিলেন। অধীরদা ও ছিলেন। প্রথমবার ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। দাদার কথামতো বাচ্চা ছানাবড়া খাইয়েছিলাম সেবার। পরের বার আট ন কেজির ছানাবড়া তুলে দিয়েছিলাম রাজীব পুত্রের হাতে।” সেই আবেগ ঠিকরে বেরোচ্ছিল অরুণের গলায়। বলেন, “এবার আসলে হ্যাট্রিক হত। সেই সুযোগ হয়ত হবে না। পোষ সংক্রান্তির দিন অধীর দার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম রাহুল দা আসবেন কি না। দাদা বলেছিলেন আসতে পারেন।” জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “মিষ্টির দোকানের মালিক এসেছিলেন। কিন্তু এবার বোধহয় ছানাবড়া খাওয়া হবে না।”
রাজ্যে প্রবেশ করা ইস্তক পদে পদে ঠোক্কর খেতে হচ্ছে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে। জলপাইগুড়ির পর মুর্শিদাবাদ। রবিবার রাজ্য পুলিশের পরীক্ষা থাকায় জলপাইগুড়িতে মধ্যাহ্ণ ভোজের কর্মসূচি বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন। আবার মুর্শিদাবাদে রাহুল গান্ধী আসার আগের দিন জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই স্টেডিয়ামে রাহুল গান্ধীর রাত যাপনের ‘সাধ’ বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন।
যদিও শেষমেষ জেলায় রাহুলের রাত্রিবাসের একটা জায়গা খুঁজে পেল মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতৃত্ব। বহরমপুর থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে কান্দিতে। পয়লা ফেব্রুয়ারি রাত্রে তিনি হাটগাছা নবগ্রামের একটি স্কুলের মাঠে রাত্রিবাস করবেন বলে জানিয়েছেন জয়ন্ত।
মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা কর্মসূচি নিয়েছে সর্বভারতীয় কংগ্রেস। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে রাজ্যের সাতটি জেলাকে বেছে নিয়েছে তাঁরা। তাতে গুরুত্ব পেয়েছে উত্তরবঙ্গ। মধ্যবঙ্গের শুধু মুর্শিদাবাদ। চলতি মাসের ২৫ তারিখ রাজ্যে প্রবেশ করেছে রাহুল বাহিনী। পরে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ও শনিবার কর্মসূচি বন্ধ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুয়ায়ী, ‘ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রা’র অঙ্গ হিসেবে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা থেকে ধুপগুড়ি হয়ে ৩১ নং জাতীয় সড়ক ধরে ময়নাগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি আসার কথা তাঁর। সেখানে পূর্ত দফতরের সামনে থেকে ডিবিসি রোড ধরে কদমতলা পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন বলে এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে। ধুপগুড়ি, ময়নাগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে চলে যাবেন শিলিগুড়ি।
তবে রবিবার রাজ্য পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষা থাকায় জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির মাঝে জাতীয় সড়কের পাশে বালাপাড়ায় একটি ধাবায় তাঁর দুপুরের আহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে খবর কংগ্রেস সূত্রে ৷ কংগ্রেস সেক্ষেত্রে খুব বেশি মুখ না খুললেও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস নেতার রাত যাপন সদর শহরে না করতে পারায় মনক্ষুণ্ণ। তাঁরা এরজন্য মুখ্যমন্ত্রীর হঠাৎ কর্মসূচিকেই দায়ি করছেন। যদিও তৃণমূল প্রশাসনের কোর্টে বল ঠেলে দায় মুক্ত হয়েছে।