Dulok Pari জীবন সুন্দর। বেঁচে থাকা সুন্দর। কিন্তু জীবনের যবনিকা পতন যন্ত্রনাময় হলে কি মিথ্যা হয়ে যায় না জীবনের সৌন্দর্য ? তাহলে পথ কোথায় ? জীবনের যবানিকপতনকেও জীবনের মতোই সুন্দর রাখা যায়। জীবনের শেষদিনে যন্ত্রের মাঝে বেঁচে থাকা নয়। সচেতন সিদ্ধান্তে জীবনের অবসান সুন্দর ভাবে হওয়া সম্ভব। সকলের আছে মানুষের মতো মর্যাদায় মৃত্যুর পথে যাওয়ারর অধিকার। তাতেই জীবনের জয়গান। মঙ্গলবার চিকিৎসক দিবসে নতুন এই ভাবনার কথা উঠে এল অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের আলোচনায়।
ইমাজিনের উদ্যোগে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগিতায় চিকিৎসক দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবেই আয়োজন করা হয়েছিল “ কেন দুল্যোক পাড়ি ? লক্ষ্য কী” শীর্ষক আলোচনার। এই বিষয়ে আলোচনা করেছেন অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার Debshankar Haldar।
Dulok Pari দ্যুলোকপাড়ি আসলে একটি সংগঠনের নাম।
সংগঠকরা জানাচ্ছেন, হাসপাতাল বা বাড়িতে যন্ত্রবিদ্ধ, ওষুধনির্ভর অবস্থায় এমন বহু মানুষের জীবন কাটে, যাঁদের সামনে কোথাও এত টুকুও আলো নেই, সুস্থতার ন্যূনতম আশ্বাসটুকুও নেই। অথচ এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এ দেশে নির্দিষ্ট বিধিবদ্ধ আইনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই আইনের কথা জানেন ক’জন? কতটুকু চর্চা হয় সেই আইনের প্রয়োগ নিয়ে? অন্তিম পর্যায়ে নিজের জীবনের পরিণতি কোন পথে চালিত হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি অধিকার যে তাঁদের আছে, তা জনতাকে জানানোর দায়িত্ব কে নেবে? ‘দ্যুলোকপাড়ি’ স্বেচ্ছায় সেই সামাজিক গুরুদায়িত্ব নিতে চায়।
Dulok Pari এদিন আলোচনায় দ্যুলোকপাড়ির পক্ষ থেকে দেবশঙ্কর হালদার বলেছেন, “ যতোদিন অবধি নিজের জীবনের প্রতি, বেঁচে থাকার প্রতি বিশ্বাস এবং মানুষের মতো সদর্থকভাবে চলে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশ্বাস আছে ততোদিন অবধি আমাদের দ্যুলোকপাড়ির কথা ভাবতে হবে। এই পাড়ি হবেই । যখন হবে তখন যেন মর্যাদা নিয়ে যেতে পারি”।
Dulok Pari দেবশঙ্কর হালদার জানিয়েছেন, মানুষের মতো বেঁচে থাকা এই ভাবনার আইনি ভিত্তিও রয়েছে । আমাদের দেশেও চলে যাওয়ার অগ্রিম ইচ্ছাপত্র তৈরির অধিকার ২০১৮ সাল থেকেই রয়েছে। অ্যাডভান্স মেডিক্যাল ডাইরেক্টিভস অনুযায়ী লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়ার জন্য আগে থেকেই এই ইউল করা যায়। ২০২২ সালে সেই আইনে কিছু বদলও আনা হয়েছে। সেই অধিকার নিয়ে সকলে সচেতন করার কাজে ব্রতী দ্যুলোকপাড়া। এই কাজে পৌরসভা, পঞ্চায়েত থেকে সাধারণ মানুষকে সকলেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
Dulok Pari এদিনের আলোচনায় উঠে এসেছে , জীবন এক আন্দন্দময় যাত্রা। আর মৃত্যু ? ভাবলেই অনেকেরই মুখ ভার হয়ে আসে। প্রযুক্তির বিকাশের দৌলতে এখন যেন মৃত্যু মানে হাসপাতালের করিডরে দীর্ঘ নিষ্ফল অপেক্ষার অবসান । নিশ্চিত মৃত্যুকে কিছুটা বিলম্বিত করতে বিপুল আয়োজন । রোগীকে বাঁচানো যাবে না জেনেও, শুধুমাত্র মৃত্যুর দিন পিছিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া কি জীবনেরই অপচয় নয় ?
Dulok Pari এদিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে ইমাজিনের পক্ষ থেকে ডাক্তার অনির্বাণ দত্ত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। আলোচনা করেন চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী Dr. Abhijit Chowdhury ।
প্রাককথনে অনির্বাণ দত্তের স্মৃতিচারণা করেন অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। স্বাগতভাষণ দেন ইমাজিনের চেয়ারপার্সন সোমা মাইতি। চিকিৎসক দিবসের অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিক ভাষণ দেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ অমিত কুমার দান। অনুষ্ঠানের শেষলগ্নে অনির্বাণ দত্তের স্মৃতিচারণা করেছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ অনাদী রায় চৌধুরী। অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডাঃ অমরেন্দ্রনাথ রায়।