Dr Anirban Dutta: ডাক্তার অনির্বাণ দত্তের শেষ লেখাতে কী ছিল ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

Dr Anirban Dutta প্রয়াত হয়েছেন  ডাক্তার অনির্বাণ দত্ত। চিকিৎসার পাশাপাশি তাঁর সঙ্গী ছিল গিটার, গান, লেখালিখি। সোস্যাল মিডিয়ায় ( Social Media)  বিভিন্ন সামাজিক বিষয় নিয়ে ছিলেন সরব। রবিবার (Sunday)  বিকেলে তাঁর সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্টে ছিল অভিভাবকদের জন্য বার্তা। বার্তা ছিল সমাজের জন্যও। কী লিখেছিলেন তিনি ?

 

“ উচ্চ মাধ্যমিকের পর কী করব সেই বিষয়ে একেবারেই কোন লক্ষ্য ছিল না। জয়েন্ট দিয়েছিলাম সবাই দেয়। ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডাক্তারী দুটোতে পেলেও সবাই যখন বলল ডাক্তারী পড়, ডাক্তার হওয়া একটা আলাদাই ব্যাপার। ভাবনা চিন্তা না করে পড়তে ঢুকে পড়েছিলাম। কোনোদিন ডাক্তারী পড়া পড়তে ভাল লাগেনি। যদিও সেই নিয়ে অবসাদ ও কাজ করে নি। বরং পড়াশুনো একটা নির্দিষ্ট জায়গা অবধি করে গানবাজনা নিয়েই দিন কাটিয়েছি। একটা কথা বলতে পারি কোনোদিন কোন পরীক্ষা তে কারচুপি করিনি। সম্বল এটুকুই। এই মুহূর্তে একটা জেলা শহরে আছি। খুবই মাঝারি মাপের ডাক্তার আমি। তাতে আমার জীবন ও দিব্যি চলে যাচ্ছে। কিন্তু এখন একটা জিনিস শিখে গেছি রোজ এক জিনিস একভাবে প্রথম দিনের উৎসাহ নিয়ে করে চলার নাম ডাক্তারী। ডাক্তারের কাছে রুগী একশো নম্বর হতে পারে। রুগীর কাছে ডাক্তার সারাদিন প্রথম। যদিও আজকাল empathy কথা টা বললেই অনেক সহকর্মী রেগে ওঠেন। সেটা জ্ঞানের তেজ বলেই মনে করি।তবে এতদিন পরে বুঝি ডাক্তারী পড়াশুনো টা একেবারেই অন্য একটা জিনিস। এর জন্য সবার আগে যেটা লাগে ডাক্তার হবো এই প্যাশন টা। রুগী র বুকে 🩺 লাগিয়ে শুনবো এই স্বপ্ন। আর যেটা লাগে সেটা হল অসম্ভব রকমের ধৈর্য্য আর নিষ্ঠা।

এমনিতেই কোন এন্ট্রান্স সেই নিষ্ঠা আছে কিনা সেই টেস্ট তো নেয় না।উল্টে এত এত টাকার খেলা। যারা ভাবে অনেক টাকা দিয়ে আসন কিনে নেবো তারা একটা জিনিস বোঝেই না যে ডাক্তারী তে পড়তে ঢোকা কিছু টা সন্ন্যাস নেওয়া বা মিলিটান্ট ক্যাম্পে যোগদান করার মত। একটা আলাদা জীবন যাপন ডাক্তারী। পড়াশুনো কত ঘন্টা করতে হয় সেটা আলাদা হিসেব।

নিজেদের যোগ্যতা তে চান্স পেয়ে ডাক্তারী পড়তে গিয়ে কত ছেলেমেয়ে মাঝ পথে দিশেহারা হয়ে যায় তার কোন হিসেব আছে? সব টাকা দিয়ে কিনে কিনে একটা ছেলে মেনে নিলাম এগিয়ে গেল। টাকা দিয়ে পাইলট হয়ে কেউ বিমান চালালে কী হবে ভাবুন তো একবার?ডাক্তারী টাও তো কিছু টা সেরকম।এই গোটা জিনিসটার জন্য সবার আগে কাঠগড়া তে তোলা উচিত অবিভাবক কে। ভারতীয় অবিভাবক মনে করে সন্তান কে জন্ম দিয়ে তারা ভগবানের কাজ করে ফেলেছে। সন্তানের প্রতি টা পড়াশুনো, খরচ তাদের কাছে ইনভেস্টমেন্ট যেটার একটা রিটার্ন আসবে একটা দিন।

পাশাপাশি সন্তান কে নিজের আধিপত্য দেখানো। কটা ছেলেমেয়ে যারা প্রাইভেটে ডাক্তারী পড়ে নিজের ইচ্ছে তে পড়তে যায় সমীক্ষা হয়নি আজও।বাবা নিজের টাকা দিয়ে ভর্তি করে দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে দেখো আমার টাকা ছিল বলে তোমার জীবন উতরে গেল। ছেলেমেয়ে কে সারাজীবন কিছু পারে না বলে পঙ্গু করে রাখার যে উৎকট উল্লাস সেটা ভারতীয় বাবা মা সব থেকে বেশি উপভোগ করে। নিজেদের কালো টাকা কে কোথাও একটা খরচ করার উপায় ও হল এই সব কাণ্ড ঘটানো। অল্প টাকা রোজগার করেও স্বাধীন মনের মানুষ হোক এই ভাবনা টা কোনোদিন আসবে না যে যতই উন্নত মানের মুখোশ পরে সংস্কৃতি..  এটা যেটা ভাবলেন সেটাই লিখলাম” ।

(সৌজন্যঃ ডাক্তার অনির্বাণ দত্তের ফেসবুক পেজ)