Doctor’s Day চিকিৎসক পেশার বৃত্তকে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে চিকিৎসকরা আবেগ বিহীন রোজগারের পেশার লুন্ঠনকারী সৈনিক হয়ে দাঁড়ায়। আবেগ হারিয়ে গেলে যান্ত্রিক হয়ে যায় চিকিৎসকরা। এক সময় উচ্চমাধ্যমিকের কৃতীরা চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখলে গর্বে বুক ভরে যেতো। এখন আর গর্বে বুক ভরে না। যতো বুদ্ধিদীপ্ত ছাত্রছাত্রীরা চিকিৎসক পেশায় আসছে। তাঁরা বুদ্ধিকে আবেগ দিয়ে পরিচালিত করছে না। বললেন চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী ।
Doctor’s Day ১ জুলাই চিকিৎসক দিবসে ইমাজিনের IMAGIN উদ্যোগে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের Murshidabad Medical College & Hospital সহযোগিতায় ডাক্তার অনির্বাণ দত্ত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়ামে সেই আলোচনা সভায় চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেছেন, চিকিৎসকদের এই যান্ত্রিক হয়ে যাওয়ার ব্যর্থতা চিকিৎসকদেরই । তবে সবাইকেই ভাবতে হবে কেন এই ঘটনা ঘটছে। সমাজের সব কিছুর প্রভাব পড়ছে চিকিৎসকদের উপর।
Doctor’s Day তিনি বলেছেন, এখন বদলে গিয়েছে চিকিৎসক আর সমাজের সম্পর্ক। দুইয়ের মাঝে এসেছে কর্পোরেটের দেওয়াল। নীট থেকে মেডিক্যাল শিক্ষার বেসরকারিকরণ কোথায় নিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ? এসব দেখে আমি আতঙ্কিত । বললেন চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী ।
১ জুলাই চিকিৎসক দিবসে ইমাজিনের উদ্যোগে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগিতায় ডাক্তার অনির্বাণ দত্ত স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়ামে সেই আলোচনা সভায় চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী আরও বলেন, বেসরকারি মেডিক্যালে কলেজে রেসের ঘোড়া তৈরী হচ্ছে । দেশের ৬০ শতাংশেরও বেশি মেডিক্যাল কলেজ ব্যক্তি মালিকানাধীন। ‘চিকিৎসা শিক্ষা’ একটা সংবেদনশীল অঙ্গন। এটা ফ্যাশন স্কুল নয়। এখানে জড়িত মানুষের জীবন। এখানে জীবন বোধ, ভাবনা তৈরীর গুরুত্ব রয়েছে। বিষয়টা অর্থ বিনিয়োগের উপর নির্ভরশীল হলে সেটা শিউরে ওঠার মতো। চিকিৎসা শিক্ষার অঙ্গন নিয়ে ভাবনার দরকার রয়েছে।
Doctor’s Day অভিজিৎ চৌধুরী বলেছেন, “ চিকিৎসা পেশার ঐতিহ্য হচ্ছে সততা, বুদ্ধি, আবেগ, দিগন্তে চোখ রাখা, স্বপ্ন দেখা”।
Doctor’s Day তিনি বলেছেন, “ চিকিৎসা পেশাকে আলাদা করে ভাববেন না । চিকিৎসক পেশার উপর সামগ্রিকভাবে একটা অদ্ভুত আবর্জনার প্রবাহ বইয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে চিকিৎসা শিক্ষার অঙ্গনে। ছত্রাকের মতো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ গজিয়ে উঠছে। আমি আতঙ্কিত”। তিনি বলেছেন, চিকিৎসক এবং সাধারণ মানুষের মাঝে যখন কোন কর্পোরেটের দেওয়াল থাকবে না, তখনই সাফল্য আসবে। ভরসা দিয়েছেন বুদ্ধি, আবেগককে ভর করে চিকিৎসক পেশার ঐতিহ্য, গৌরব ফেরানোর। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ডাক্তার অনির্বাণ দত্তকে স্মরণ করার সময় চিকিৎসকদের নিয়েও ভাবতে হবে। চারপাশের ঘটনায় প্রভাবিত হন চিকিৎসকরাও।
Doctor’s Day “ কেন দ্যুলোকপাড়ি ?” এই বিষয়ে আলোচনা করেন অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদার। তিনি জানিয়েছেন , দ্যুলোকপাড়ি আসলে একটি সংগঠনের নাম। হাসপাতাল বা বাড়িতে যন্ত্রবিদ্ধ, ওষুধনির্ভর অবস্থায় এমন বহু মানুষের জীবন কাটে, যাঁদের সামনে কোথাও এত টুকুও আলো নেই, সুস্থতার ন্যূনতম আশ্বাসটুকুও নেই। অথচ এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এ দেশে নির্দিষ্ট বিধিবদ্ধ আইনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সেই আইনের কথা জানেন ক’জন? কতটুকু চর্চা হয় সেই আইনের প্রয়োগ নিয়ে? অন্তিম পর্যায়ে নিজের জীবনের পরিণতি কোন পথে চালিত হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনি অধিকার যে তাঁদের আছে, তা জনতাকে জানানোর দায়িত্ব কে নেবে? ‘দ্যুলোকপাড়ি’ স্বেচ্ছায় সেই সামাজিক গুরুদায়িত্ব নিতে চায়।
Doctor’s Day এদিনের সভায় চিকিৎসক অনির্বাণ দত্তের স্মৃতিচারণা করেন নাট্যকার, অভিনেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি তুলে ধরেছেন কীভাবে গ্রাম, শহরের মানুষকে গান শুনিয়েছেন চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। তাঁর ছিল আবেগ, স্বপ্ন দেখার চোখ। অনুষ্ঠানের স্বাগতভাষণ দেন ইমাজিনের চেয়ারপার্সন সোমা মাইতি। চিকিৎসক দিবসের অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিক ভাষণ দেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ অমিত কুমার দান। অনির্বাণ দত্তের স্মৃতিচারণা করেছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ অনাদী রায় চৌধুরী। সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী শ্রীমন্ত দাস। দেখানো হয় ডাক্তার অনির্বাণ দত্তর স্মৃতিতে তৈরী ভিডিও উপস্থাপনা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ অমরেন্দ্রনাথ রায়।