এখন খবরমধ্যবঙ্গ নিউজপরিবেশবিনোদনহেলথ ওয়াচখেলাঘরে বাইরেলাইফস্টাইলঅন্যান্য

Dewali 2025 বাজি বাজে। কষ্ট দেয় কুকুরদের। আনন্দ হোক সহজ

Published on: October 22, 2025
Dewali 2025

Dewali 2025 শব্দবাজি এবং আতশবাজিতে কুকুরদের ক্ষতি — এক নীরব যন্ত্রণা। লিখলেন পরিবেশকর্মী প্রণব রায়।

দীপাবলি, কালীপূজা Kalipuja  কিংবা অন্য কোনো উৎসব মানেই আলো, রঙ, আনন্দ, আর সঙ্গে থাকে আতশবাজির ঝলকানি। কিন্তু এই উৎসবের উল্লাসের মাঝেই এক দল নীরব প্রাণী ভয় আর যন্ত্রণায় কাঁপতে থাকে—রাস্তাঘাটের কুকুরেরা। মানুষ যখন আনন্দে মেতে ওঠে, তখন এই পশুগুলোর কাছে শব্দবাজি আর আতশবাজি হয়ে ওঠে এক দুঃস্বপ্নের নাম। পশ্চিমবঙ্গের শহর-গ্রাম জুড়ে প্রতিবছর এই সময়ে হাজার হাজার কুকুর আতঙ্কে পালিয়ে বেড়ায়, আঘাত পায়, এমনকি কখনও মৃত্যুর মুখেও পড়ে।

আরও পড়ুনঃ Women’s Safety পথে নামার পাশাপাশি সচেতনও হতে হবে

Dewali 2025 অতিসংবেদনশীল শ্রবণশক্তি:


মানুষের তুলনায় কুকুরের কান অনেক বেশি সংবেদনশীল। মানুষ যেখানে সর্বোচ্চ ২০,০০০ হার্জ পর্যন্ত শব্দ শুনতে পারে, সেখানে কুকুর শুনতে পারে প্রায় ৬০,০০০ হার্জ পর্যন্ত। অর্থাৎ, আমাদের কাছে যে শব্দ সহনীয়, তাদের কাছে তা বহুগুণ বেশি জোরে ও তীব্র শোনায়। শব্দবাজির বিস্ফোরণ তাদের কানে যেন বজ্রপাতের মতো লাগে।

ভয়, মানসিক চাপ ও শারীরিক প্রতিক্রিয়া:


বাজির শব্দ শুনে অনেক কুকুর হঠাৎ চমকে ওঠে, কাঁপতে থাকে, লুকিয়ে পড়ে, এমনকি ঘর থেকে পালিয়ে যায়। অনেক সময় ভয় এতটাই প্রবল হয় যে তারা হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত পেতে পারে। ঘরের পোষা কুকুরেরা আতঙ্কে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়, কুঁই কুঁই করে কাঁদে বা অচেতন হয়ে পড়ে। রাস্তাঘাটের কুকুরদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। শব্দের চোটে তারা রাস্তার দিকে দৌড় দেয়, দুর্ঘটনার শিকার হয়, অনেক সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়।

Dewali 2025 ধোঁয়া ও রাসায়নিকের ক্ষতি:
শব্দবাজির সঙ্গে যে ধোঁয়া ও রাসায়নিক নির্গত হয়, তাও প্রাণীদের জন্য বিপজ্জনক। এই ধোঁয়ায় সালফার, নাইট্রেট, কার্বন এবং ধাতব পদার্থ মিশে থাকে, যা শ্বাসপ্রশ্বাসে প্রবল সমস্যা তৈরি করে। অনেক কুকুরের চোখ ও নাক জ্বালা করে, শ্বাসকষ্ট হয়, এমনকি ফুসফুসে সংক্রমণও দেখা দেয়।

Dewali 2025 দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব:
বারবার এমন অভিজ্ঞতা কুকুরদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। অনেক কুকুর পরবর্তীতে মানুষের প্রতি ভয় পেতে শুরু করে, খাবার সংগ্রহে সমস্যা হয়, এবং আচরণে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেয়। পোষা প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এই ট্রমা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

সমাধানের পথ:
মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব, এই নিরীহ প্রাণীদের ভয় আর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়া। শব্দবাজির পরিবর্তে আমরা পরিবেশবান্ধব, নিঃশব্দ আলো-বাজি ব্যবহার করতে পারি। পোষা প্রাণী থাকলে কালীপূজা বা দীপাবলির রাতে তাদের নিরাপদ, বন্ধ জায়গায় রাখতে হবে, জানালা-দরজা বন্ধ রাখতে হবে যাতে শব্দের তীব্রতা কিছুটা কমে। এছাড়া পশুপ্রেমী সংগঠনগুলো এই সময়ে সচেতনতা প্রচার চালাতে পারে—শব্দবাজির ক্ষতি নিয়ে স্কুল, ক্লাব, ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করে।

Dewali 2025 উৎসব আনন্দের, কিন্তু সেই আনন্দ যদি অন্য প্রাণীর জন্য যন্ত্রণা হয়ে ওঠে, তবে তা প্রকৃত আনন্দ নয়। আমরা যদি একটু সচেতন হই, তাহলে কুকুরদের সেই আতঙ্ক থেকে মুক্তি দিতে পারি। উৎসব হোক আলো ও ভালোবাসার, শব্দ আর যন্ত্রণার নয়।

(লেখক পরিবেশকর্মী। মতামত ব্যক্তিগত)

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now