নিজস্ব সংবাদদাতা,বহরমপুরঃ তৃণমূলের চোখে বিজেপিই প্রধান শত্রু। শুক্রবার কালীঘাটে মুর্শিদাবাদের নেতাদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘন্টার বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল চারটে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। সেই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সি ও ফিরহাদ হাকিম।
এদিন জেলার দুই সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্যরাও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ‘দিদি’ লোকসভা নির্বাচনে জেলার তিনটি আসন জিতে আসতে পরামর্শ দিয়েছেন। নেতাদের জনসংযোগে আরও বেশি সময় দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। “বিজেপি যেন কোনওভাবেই মানুষকে ভুল বোঝাতে না পারে তার জন্য সজাগ থাকতে বলেছেন।” দাবি জেলার এক শীর্ষ নেতার।
জেলা নেতাদের এদিন বৈঠকে দেখে প্রথমেই আবু তাহের খানের শারিরীক অবস্থার খোঁজ খবর নেন দিদি। তাঁর কাছ থেকে প্রথমেই শোনেন জেলার বর্তমান অবস্থা। তারপর একে একে শাওনী সিংহরায়, খলিলুর রহমান, জাকির হোসেনদের কথা শোনেন। তাঁদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। তবে এদিন বৈঠকে কংগ্রেসকে নিয়ে ‘দিদি’ কোনও কথা বলেন নি। তেমনি প্রার্থী নিয়েও নেতাদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বলেই জানান বৈঠকে উপস্থিত নেতারা। তবে তাঁদের একাংশের দাবি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মুর্শিদাবাদ লোকসভা আসনে আবু তাহের খানকেই পুনরায় প্রার্থী করা হবে।
একইভাবে জঙ্গিপুরেও প্রার্থী হিসেবে খলিলুর রহমানকেই প্রার্থী করা হবে বলে মত তাঁদের। তবে বহরমপুর নিয়ে নেতাদের ‘হোমওয়ার্ক’ করবার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। যদিও “ইন্ডিয়া” জোটের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ওই আসন নিয়ে তেমন চুড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত “দিদি নেন নি।” তবে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন “অধীর চৌধুরীকে সিট ছাড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। ও বিজেপির দালাল।”
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস সাত থেকে বারোটি আসন তৃণমূলের কাছে চাইতে পারে বলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি। যদিও রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আপত্তি রয়েছে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর। তেমনি সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কোনওরকম অ্যালায়েন্স হবে না।
একইসঙ্গে এদিন জেলায় আইএসএফের গুরুত্ব বৃদ্ধি নিয়ে জেলা নেতারা কেউ কেউ বলতে গেলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টি গুরুত্ব দেন নি বলেই দাবি সূত্রের। বৈঠক থেকে বেড়িয়ে সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, “আজকের বৈঠক খুব ভালো হয়েছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে হাতে হাত রেখে বিরোধী বিজেপিকে মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন দিদি। ”