Murshidabad Bera Festival ছয় বছর পরে ‘বেড়া’ উৎসব, তুঙ্গে বিতর্ক মুর্শিদাবাদে

Published By: Imagine Desk | Published On:

Murshidabad Bera Festival ছয় বছর পর বেড়া উৎসব। বেড়ার বাঁধনে অটুট হবে ভালবাসা। এবার আগ্রহ তুঙ্গে। আর তাকে ঘিরেই শুরু হয়ে গেল বিতর্ক। খোদ সরকারি আমন্ত্রণপত্র ঘিরেই এই বিতর্কের সূচনা। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদ Murshidabad শহরে ওয়াসেফ মঞ্জিলে ঐতিহাসিক ‘বেড়া’ উৎসব Bera Festival হবে। ২০১৮ সালের পর ২০২৫। মাঝখানে করোনা কাল সহ ভাগীরথী দিয়ে অনেক জল বইয়ে গিয়েছে। এবার বেড়া উৎসব ঘিরে প্রস্তুতি তাই জোরকদমে। তারই মধ্যে এই উৎসব উদযাপনের আগেই আমন্ত্রণপত্র নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুর্শিদাবাদ এস্টেটের তত্ত্বাবধানে বেড়া ভাসানের অনুষ্ঠানে জেলে থেকেও আমন্ত্রিত তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা! বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের নামের তালিকায় জ্বলজ্বল করছেন বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। অথচ আমন্ত্রণ থেকে বঞ্চিত মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। এই ঘটনায় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন এই বিজেপি বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ, জীবনকৃষ্ণকে চাকরি চুরির দায়ে ইডি গ্রেফতার করেছে। আগে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। অথচ বিজেপি হওয়ায় তৃণমূল সরকার আমন্ত্রণের তালিকায় স্থানীয় বিধায়ককে রাখেনি।
জানা গিয়েছে বেড়া উৎসবে প্রধান অতিথি ও উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের আইন ও বিচার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী মলয় ঘটক। এছাড়া তালিকায় জেলার বিভিন্ন সাংসদ ও বিধায়কদের নাম রয়েছে। এছাড়াও আছে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের নাম। কেন তালিকায় নাম নেই মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়কের? কেনই বা তৃণমূলের বিতর্কিত জেলবন্দি বিধায়কের নাম আমন্ত্রিতদের তালিকায়?

Murshidabad Bera Festival এই বেড়া উৎসবে আলোর রোশনাইয়ে ভাসে মুর্শিদাবাদ। আলো ঝলমলে হয়ে ওঠে নবাবের শহর । হাজারদুয়ারি প্যালেস থেকে ইমামবাড়া। ওয়াসেফ মঞ্জিল। ঐতিহ্যের বেড়া উৎসবে আলোর মালায় সেজে ওঠে চারিদিক। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিচার বিভাগ ও মুর্শিদাবাদ এস্টেটের পরিচালনায় এই বেড়া উৎসব ঘিরে পর্যটক, স্থানীয় বাসিন্দাদের ঢল নামে। বেড়া ভাসানকে ঘিরে মুর্শিদাবাদবাসীর সঙ্গে জড়িয়ে আবেগ, ইতিহাস। কথিত আছে নবাবরা দিল্লির দরবারে যেতেন গঙ্গা বক্ষ দিয়েই। অনেক সময় জলদস্যুদের আক্রমণ, দুর্ঘটনার মুখেও পরতে হতো। সেই থেকেই জল দেবতাকে তুষ্ট করতে শুরু হয় বেড়া ভাসান। নবাবদের আমল থেকেই হয়ে আসছে এই আলোকদান উৎসব। কলা গাছের ভেলা তৈরি করে রঙ, বেরঙের কাগজ, মোমবাতি, প্রদীপ দিয়ে সুসজ্জিত করে জল দেবতাদের উদ্দেশ্যে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় ভেলা। কলা গাছের ভেলার ওপর বাঁশ দিয়ে মসজিদের কাঠামো তৈরি করে বিভিন্ন রঙিন কাগজ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা বেড়া উৎসবের কাহিনী।

গৌরীশঙ্কর ঘোষের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের বেড়া উৎসবে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে নাম রয়েছে দেখলাম জীবনকৃষ্ণ সাহার। যাকে চাকরি চুরির দায়ে ইডি গ্রেফতার করেছে। আগে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। অথচ বিজেপি থেকে নির্বাচিত হওয়ায় তৃণমূল সরকার আমন্ত্রণের তালিকায় স্থানীয় বিধায়ককে রাখেনি। কোনওরকম প্রশাসনিক বৈঠকে ডাকা হয় না। শান্তি বৈঠকে বিজেপি বিধায়ক ডাক পাবে না। বেড়া উৎসব মুর্শিদাবাদ বিধানসভার মধ্যে হচ্ছে। সেখানে বিধায়কের ডাক থাকবে না? অথচ তৃণমূলের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ি বড়ঞায়। মুর্শিদাবাদ থেকে ৭০ কিমি দূরে তাঁর নেমতন্ন আছে।

বেড়া উৎসবের সূচনা পর্বেই বিতর্ক প্রসঙ্গে তৃণমূল পরিচালিত মুর্শিদাবাদ পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ ধর বলেন, ‘ মানবিক মুখ্যমন্ত্রী তো বলেই থাকেন ধর্ম আপন আপন, উৎসব সকলের। নিমন্ত্রণ বড় ব্যাপার নয়। নিমন্ত্রণ করা উচিত ছিল, করেনি কেন এস্টেট ম্যানেজার বলতে পারবেন। জীবনকৃষ্ণ সাহার নামটা হয়তো আজকে আমরা দেখছি, কিন্তু যে ঘটনা ঘটেছে তার আগে কার্ডটা ছাপিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের ও রেলের যে কোনও প্রোগ্রামে আমাদের ডাকা হয় না। এই সিস্টেম এইভাবেই চলছে। যদিও সবাইকে নিয়ে কাজ করলে সুন্দর হবে।