মধ্যবঙ্গ ওয়েব ডেস্কঃ সাবেকি আদবকায়দা। দুর্গা পুজো উপলক্ষ্যে এমনই সাজে সেজেছে কাশিমবাজার রাজবাড়ি। রাজকীয় আলো ও আবহে রাজপ্রাসাদ থেকে চণ্ডী মণ্ডপের নতুন সাজ। ভোগ দালানে ম ম করছে নানা পদের রান্নার সুবাস। হরেকরকম নৈবেদ্য দেওয়া হয় দেবীকে। তারই তোড়জোড় সকাল থেকে। খিচুরি, পোলাও থেকে শুরু করে পায়েস মিষ্টি। রয়েছে মাছেরও হরেক রকম পদ। সব মিলিয়ে রাজবাড়ির আদবকায়দাতেই চলছে মায়ের আরাধনা।
রথের দিন দুর্গা কাঠামোয় মাটি পড়ার পর থেকেই কাশিমবাজার রাজবাড়িতে শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। প্রথা মেনেই দুর্গাপুজো হয়ে থাকে রাজবাড়ির নাট মন্দিরে । ২০২৩ সালে এসেও বদলায়নি পুজার রেওয়াজ। ঐতিহ্য ও বনেদিয়ানায় ভর করেই সিংহ বাহিনী দেবী দুর্গা পূজিত হন রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে। বনেদিবাড়ির সেই পুজো প্রত্যক্ষ করতে দেশ বিদেশ থেকে অতিথিরা আসেন মুর্শিদাবাদে। কাশিমবাজার রাজবাড়ির পুজো নিয়ে কী জানাচ্ছেন দেশ বিদেশের অতিথিরা। সুদূর নেদারল্যান্ড থেকে এসেছেন মৌসুমী ওবেরয়। এখানে এসে বনেদি পরিবারের পুজো দেখে অভিভূত তিনি। জানালেন, “মনে হচ্ছে এ যেন আমার ঘরের পুজো।”
ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে জানা যায়, ১৯২৫ সালে কাশিমবাজারে রেশম, সিল্ক সহ বিভিন্ন ব্যবসা করতে এলেন কমলা রঞ্জন রায়। যদিও কাশিমবাজারে এই রায় পরিবারের শিকড় প্রায় ২০০ বছরেরও পুরনো। ১৬৯০ সালে বাংলা বিহার ওড়িশা বর্গী আক্রমণ হয়। সেই আক্রমণে নড়ে যায় রায় পরিবারের রেশম ব্যবসা। তখনই পদ্মা তীরের ফিরোজপুর ছেড়ে রায় পরিবার উঠে এসেছিল কাশিমবাজারে। সেই শুরু।
রায় পরিবারের প্রবীণ সদস্য প্রশান্ত রায় জানান, রাজা দীনবন্ধু রায় তৈরি করেন সুদৃশ্য কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ি। সেখানেই তৈরি করেন লক্ষ্মীমন্দির এবং চণ্ডীমণ্ডপ। সূচনা হয় দুর্গা পুজার। পুরোনো রীতি মেনে আজও পুজার ক’দিন আলোর রোশনাইয়ে, ভোগের গন্ধে ও মানুষের সমাগমে সেজে ওঠে কাশিমবাজার রাজবাড়ি।