নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরাক্কাঃ হিল্লে হতে চলেছে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘কয়লা আনলোডিং ইউনিট’-এ কর্মরত প্রায় সাড়ে পাঁচশো অস্থায়ী কর্মীর। এত দিন পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের কোনও চুক্তি ছিল না। অবশেষে বহু জল্পনা কল্পনার পরে চুক্তির আওতায় আসতে চলেছে এই ঠিকা শ্রমিকরা। মুর্শিদাবাদের এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম এবং শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকের পর ঠিকা শ্রমিক এবং এনটিপিসি কর্তৃপক্ষের মধ্যে কয়েকটি শর্ত ঠিক হয়। সূত্রের খবর, আগামী ১৮ জানুয়ারি কলকাতায় লেবার কমিশনারের উপস্থিতিতে এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে লেবার কন্ট্রাক্টরের উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।ফি-বছরই এনটিপিসিতে কর্মরত শ্রমিকদের পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে হয়। এরপরে মাসের পর মাস কাজ করলেও এত দিন ধরে দিনমজুরিই পাচ্ছিলেন কর্মীরা। এই চুক্তি স্বাক্ষর হলে এখন থেকে কেবলমাত্র কাজ পাওয়ার শুরুতে একবারই পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে। তবে কর্মরত অবস্থায় কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠলে সে ক্ষেত্রে তাঁর প্ল্যান্টে ঢোকার ‘গেট পাস’ বাতিল হতে পারে বলে জানানো হয়েছে এনটিপিসি’র পক্ষে। তা ছাড়া ইউনিটে কর্মরত অবস্থায় কোনও দুর্ঘটনা হলে বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনও শ্রমিক ৬২ বছর বয়সের আগে চাকরি ছাড়লে তাঁর পরিবারের কোনও এক জন সদস্য ওই কাজ পাওয়ার দাবিদার হবেন।
এ বিষয়ে ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল বলেন, ‘‘এনটিপিসি’র ইউনিটে কর্মরত দক্ষ, অদক্ষ এবং আংশিক দক্ষ শ্রমিক; এই তিন ভাগে ভাগ করে চুক্তির বিভিন্ন শর্ত নির্ধারিত হয়েছে। নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার ফলে প্রত্যেক শ্রমিকের বেতন মাসে অন্তত তিন হাজার টাকা করে বৃদ্ধি পাবে।”
প্রায় ২১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ফরাক্কা এনটিপিসি প্ল্যান্টে। প্রতি দিন ওয়াগন এবং কয়লা আনলোডের কাজ হয়। যদিও ওই প্রক্রিয়াটি এখন অনেকটাই যান্ত্রিক ভাবে হয়। তবু প্রায় শতাধিক শ্রমিক প্রতিদিন এই কাজ করেন। ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আইএনটিটিইউসি চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সোমেন পাণ্ডে বলেন, ‘‘এই চুক্তির ফলে কর্মস্থলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। আমরা এই পদক্ষেপে খুশি’’। ফরাক্কার সিটু নেতা দিলীপ মিশ্র জানান, “শ্রমিকদের দাবি দাওয়া কখনও শেষ হয়না। আপাতত এই চুক্তি ঠিক হয়েছে। যদিও তা ১৮ তারিখ কনফার্ম হবে।”