নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ শিলিগুড়িতে বামেরা রাহুল গান্ধীর ‘ন্যয় যাত্রা’য় পা মিলিয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদেও একই ভূমিকায় দেখা যাবে বামেদের? পদযাত্রা শুরু হওয়ার দেড় দিন আগেও কথা দিতে পারল না জেলা সিপিএম। যদিও পদযাত্রার স্থান কাল নিয়ে একপ্রস্থ ফোনালাপ সেরে নিয়েছেন জেলা নেতারা। তৃণমূল অবশ্য খোঁচা দেওয়ার সুযোগ ছাড়তে চায়নি এই ফাঁকে। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “ যেচে নেমতন্ন নিচ্ছে ওরা। সিপিএমের কিছুই যে আজ অবশিষ্ট নেই এর থেকে ভাল উদাহরণ আর কি বা আছে? ” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, “শিলিগুড়িতে ওরা গিয়েছিলেন। এখানে গেলে যাবে।“
অর্থাৎ জেলাস্তরে যে সিপিএম নেতাদের আলাদা করে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না তা একপ্রকার বলেই দিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ। এদিন সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা সম্প্রতি শেষ হওয়া বাম যুব সংগঠনের ইনসাফ যাত্রার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, “এই কর্মসূচি আমাদের ইনসাফ যাত্রার তূল্য। কংগ্রেসের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। সমস্ত গণতান্ত্রিক দলের উচিত এই দুই সরকার রাজ্য ও কেন্দ্র যে অন্যায় করে চলেছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা। আমরাও লড়ছি তারাও লড়ছে।
আমাদের কোনও বিরোধিতা নেই বরং নৈতিক সমর্থন আছে।” তিনি যোগ করেন, “কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ করে নি। যদি আমন্ত্রণ জানান তাহলে অবশ্যই থাকব।” শিলিগুড়িতে অবশ্য স্থানীয় কংগ্রেস স্থানীয় বাম নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে দাবি করেছেন জামির। রাজ্যস্তরের নেতাদের যদিও প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মুর্শিদাবাদে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমেরও রাহুল গান্ধীর ‘ন্যয় যাত্রা’য় পা মেলানোর কথা। এদিন জামির অবশ্য বলেন, “আমাদের দলের শৃঙ্খলা অনুযায়ী রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ এলে অবশ্যই আমরা কংগ্রেসের পদযাত্রায় অংশ নেব।” তবে জেলায় বাম যুব সংগঠনের ইনসাফ যাত্রা কর্মসূচিতেও জেলা কংগ্রেসকে আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানায়নি যুবরাও। সেই হিসেব হয়ত মিলে গেল কংগ্রেসের ন্যয় যাত্রায়। এমনটাই পর্যবেক্ষণ অভিজ্ঞদের।
রাজ্যে পরিবর্তনের জমানায় ২০০১৬ সাল থেকে কংগ্রেসের জোট সঙ্গী বামেরা। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে প্রত্যক্ষ জোট না হলেও বহরমপুরে আরএসপি প্রার্থী দিলেও কংগ্রেসকে সমর্থন করেছিল সিপিএম। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল এখন এক নৌকা “ইন্ডিয়া”র যাত্রী। রাজ্যে জোটে জট পেকেছে। তৃণমূল একা লড়াই করবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেসের দিল্লি নেতারা অবশ্য এখনও মমতার দিকে জোটের হাত প্রসারিত করে রেখেছেন। ফয়সলা আদৌ হবে কি না এখনও কোনও পক্ষই জানে না। এই অবস্থায় বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনে নামলে উভয়েরই একে অপরকে প্রয়োজন। সেদিকে তাকিয়ে কোনও পক্ষই অভিমানের রাস্তায় হাঁটবেন না বলেই দাবি রাজনীতির অন্দরে।