আত্মতুষ্টিতেই বিপদ তৃণমূলের, হুঁশিয়ারি বিতর্কিত হুমায়ুনের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ দলের নিচু তলা থেকে উঁচু তলা পর্যন্ত নেতা-কর্মীরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছেন। কাটিয়ে উঠতে হবে সেই আত্মতুষ্টি। নিচু থেকে উঁচু তলা পর্যন্ত তৈরি করতে হবে ‘চেইন রিলেশন’।  না হলে  আগামী দিনে জেলায় তৃণমূলের জেতা আসনও টিকিয়ে রাখা মুশকিল হবে। এই ভাষাতেই দলের নেতাদের হুঁশিয়ারি দিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তার জন্য জেলা নেতাদের মাঠে নামতে হবে। তবেই দলের ঐক্যতা থাকবে বলে মনে করেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক।

দলের প্রতিষ্ঠাতা দিবস সহ আগামী একমাসের কর্মসূচি নিয়ে রবিবার বৈঠক ডেকেছিল তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা কমিটি। সেই বৈঠকে এভাবেই জেলা নেতাদের সামনে ‘সোজা সাপ্টা’ মন্তব্য করেন হুমায়ুন। যা নিয়ে  দলেরই অন্দরে ফের শুরু হয়েছে ফিসফাস।

জেলা পরিষদের হিজল কনফারেন্স হলে এদিনের বৈঠক পরিচালনা করছিলেন দলের জেলা শীর্ষ নেতারা। বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার বিধায়কদের সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সহ সভাপতি মইনুল হাসানও। সূত্রের দাবি, তাদেরকে হুমায়ুন বলেন, দলের মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন। ঐক্য না থাকলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে।

একুশের বিধানসভায় একলপ্তে কুড়িটি আসন জিতেছে তৃণমূল, পরে পুরসভা ও পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত তৃণমূলের ঝুলিতে। আর তাতেই দলের নেতা কর্মীদের শরীরের ভাষা বদলে গিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। হুমায়ুন বলেন, “দলের একাংশ আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে জেলার বিধায়কদের একসঙ্গে ওঠাবসা থেকে বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে।  তাই আগামী ভোটে জিততে গেলে আমাদের নিজেদের ভেতরের লড়াই থামাতে হবে। জেলাকে দায়িত্ব নিতে হবে। ব্লক সভাপতিদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।“ নেতাদের উদ্দেশ্যে হুমায়ুন বলেন, “ চেয়ার পেয়ে এলাম গেলাম করলে হবে না। ২৪ এর রেজাল্টে খামতি হলে ২৬-এ তার প্রভাব পড়বে।”

ভরতপুরের দুই ব্লকের তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনের আদায় কাঁচকলা সম্পর্কের কথা সবাই জানে। তেমনি হরিহরপাড়া, জলঙ্গির মতো একাধিক ব্লকের ক্ষেত্রেও বিধায়ক ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে  বনিবনা হয় না। আর তা নিয়ে জেলা নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ না করায় পূর্বতন জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায়ের বিপক্ষে চলে গিয়েছিলেন সাত বিধায়ক।

সম্প্রতি বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলায় সভাপতি বদল হয়েছে। শাওনিকে সরিয়ে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া  হয়েছে কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে। কিন্তু তাদের “সমস্যা” এখনও “সমাধান” হয়নি বলেই সূত্রের দাবি। হুমায়ুনের এদিনের দাবি সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন জেলা নেতাদের একাংশ।

তবে ওই বৈঠকেই জেলা সভাপতি অপূর্ব বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমায়ুনের প্রস্তাব জানাবেন বলে জানিয়েছেন। তবে নেতারা যে আত্মতুষ্টিতে ভুগছে তা স্বীকার করে নেন অপূর্ব। তিনি বলেন, “আত্মতুষ্টি কাটিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আমরা শূন্য থেকে শুরু করবো নতুন বছরের এক তারিখ থেকে। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।”