‘আসছেন মন্ত্রী’, খবর কানে যেতেই এক বুক আশা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন। খড়কুটোর আশা পেয়ে ভেবেছিলেন, মেঘে ঢাকা জীবনে নীতার মতো চিৎকার করে বলবেন, ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’। ওঁর কি অতো জানা আছে রাস্তা তৈরি সহ বিভিন্ন কাজে মন্ত্রীর কতো ব্যস্ততা! মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়া বাহাদুরপুর স্কুলের শিবিরে সাহায্যের কাতর আর্জি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন নয়া বাহাদুরপুরের বাসিন্দা আদিরা (Adira Biwi)।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ‘আমার ছেলে মেয়েরা চাইছে মা বেঁচে থাক। আমি ক্যানসারের রোগী। আমার চিকিৎসা হয় না। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। মাথায় গোলাপী রঙের ওড়না জড়িয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন মুর্শিদাবাদের এক ক্যানসার আক্রান্ত মহিলা। মন্ত্রী আসছেন শুনে বুধবার সুতিতে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ Amader Para Amader Samadhan শিবিরে হাজির হন তিনি। এর আগে পঞ্চায়েতের সদস্য থেকে জনপ্রতিনিধিদের দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরেছেন আদিরা বিবি । বার বার বলেছেন, ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই’। চিকিৎসার খরচ জোগাতে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন বারবার। গত পাঁচ বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন। বলা ভালো কর্কট রোগ আদিরার মধ্যে তার নিজের মতো চলছে। কারণ গরীব পরিবার। চিকিৎসার সামর্থ্য হয়নি। হাত বাড়ায়নি কেও। সুরাহা হয়নি কিছুই। ‘আসছেন মন্ত্রী’, খবর কানে যেতেই তাই এক বুক আশা নিয়ে ছুটে গিয়েছেন। আশা পেয়ে ভেবেছিলেন, মেঘে ঢাকা জীবনে নীতার মতো চিৎকার করে বলবেন, দাদা আমি বাঁচতে চাই। ওঁর কি অতো জানা আছে রাস্তা তৈরি সহ বিভিন্ন কাজে মন্ত্রীর কতো ব্যস্ততা! মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়া বাহাদুরপুর স্কুলের শিবিরে সাহায্যের কাতর আর্জি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন নয়া বাহাদুরপুরের বাসিন্দা আদরি। নিরাপত্তারক্ষীরা প্রায় কাছেই ঘেঁষতে দিচ্ছিলেন না তাঁকে। শেষমেশ সমাধান না হলেও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামানের শুকনো আশ্বাস নিয়েই বাড়ি ফিরলেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মন্ত্রী প্রধানকে দেখিয়ে বলেছেন, ‘প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন’। ওই রোগী জানান, একটি ফোন নম্বর দিয়ে বলা হয়েছে কাজ না হলে যোগাযোগ করতে।
Murshidabad News এদিকে অনেকে এদিন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামানকে পেয়ে অসন্তোষ চেপে রাখতে পারেননি। সমালোচনার মুখে মন্ত্রীরাও দিলেন সাফাই। পরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, ‘ কেউ ১০০ টার মধ্যে ৯০ টা সরকারি পরিষেবা পেয়েছেন। ১০ টা যে কোনও কারণে পাননি মানেই তাঁকে সরকার কিছু দেয়নি! এটা বলার জন্য বলা। সকলেই খুশি আছেন। মানুষের কোনও অভিযোগ নেই। নুরপুরের মাটিতে বিগত বিধানসভায় আমাকে দশ হাজার, এবারেও আট হাজার ভোট দিয়েছে, খুশি বলেই তো দুহাত তুলে আশীর্বাদ করছেন। ‘ এদিন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার রঘুনাথগঞ্জ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের শেখালিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, সুতি ১ নম্বর ব্লকের নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতএর একাধিক এলাকায়- ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ ক্যাম্প সরেজমিনে ঘরে দেখেন দুই মন্ত্রী। সরাসরি সাধারণ মানুষের মুখ থেকে শুনলেন সমস্যা। দিলেন সমাধানের আশ্বাস।