‘এ.আই কি কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো লিখতে পারে?’ সেমিনার বহরমপুরে

Published By: Madhyabanga News | Published On:

দেবনীল সরকার, বহরমপুরঃ এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স সর্বাপেক্ষা আলোচিত বিষয়। এই সময়ে, যখন লেখাপড়া থেকে শুরু করে ব্যবসায় বানিজ্য, শিল্পচর্চা এমনকি মানুষের জীবনশৈলীও অনেকাংশে এ.আই নির্ভরশীল; তখন শুক্রবার সন্ধ্যায় বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল একটি সেমিনার। মুর্শিদাবাদ জেলার গণ আন্দোলনর অন্যতম মুখ সুধীন সেন, তাঁর জন্মশতবর্ষ উদযাপন ঘিরে আয়োজন করা হয়েছিল এই সেমিনার। ২০২২ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় সুধীন সেনের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের কর্মসূচি। সারাবছর ধরে চারটি সেমিনারের পাশাপাশি নানাবিধ সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পালন করে এসেছে সুধীন সেন স্মরণ মঞ্চ কমিটি। যার শেষ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হল শুক্রবার সন্ধ্যায় বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে। শেষ দিনের সেমিনার ‘এ.আই কী কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো লিখতে পারে?’ আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী তথা লেখক ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী। এছাড়াও এদিন সুধীন সেনের জীবনী ‘রণু’ শীর্ষক গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। শহরের বিশিষ্টজন থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মও এদিন সেমিনার শুনতে হাজির ছিলেন।

সেমিনারের শুরুতে হয় বই প্রকাশ তারপরেই শুরু হয় সেমিনার। প্রায় এক ঘণ্টা দশ মিনিট দীর্ঘ এই সেমিনারে সবিস্তারে আলোচনা করেন ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী। তাঁর রাজনীতি জীবনের অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন অনুষঙ্গে বারবার উঠে আসে এ.আই প্রয়োগের বিষয়। কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো প্রসঙ্গে, আলোচনা করতে গিয়ে তিনি মার্ক্সের জীবনবোধ ও কমিউনিস্ট ইস্তেহারের সারকথা আলোচনা করেন। কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো কী এবং কেন তা নিয়েও এদিন সবিস্তারে আলোচনা করেন ধ্রুবজ্যোতি। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে অনেক উদাহরণ দিয়ে আলোচনাকে দর্শক মনোগ্রাহী করে তোলেন আলোচক। আসলে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সত্যিই কৃত্রিম এবং মানুষ ছাড়া আদতে তার নিজস্ব কোনও বুদ্ধিমত্তা নেই, এই যুক্তি প্রমাণে সচেষ্ট ছিলেন আলোচক। এবং আলোচনার মাঝে বারবার তিনি মানুষের ব্যবহারিক প্রয়োগে এ.আই এর ভূমিকা নিয়ে সচেতন থাকার কথা বলেন। সেমিনার শেষে তিনি বলেন, “এই সংকটের মধ্যে আমাদের থাকার কারণ নেই, যে যন্ত্র মানুষ হয়ে যাবে। আমাদের যেটা অনুসন্ধান করবার কথা মানুষ যাতে যন্ত্র না হয়ে যায়”। সৃষ্টি নিয়েও তিনি মার্ক্সের ব্যাখ্যাকে সহজে বিশ্লেষণ করে বলেন, “সৃষ্টি  কি? সৃষ্টি আসলে এ যাবত কাল হয়ে যাওয়া সমস্ত সৃষ্টির বিরুদ্ধে বিদ্রোহও বটে। এই বিদ্রোহ মানুষের ইতিহাসের মহাকাব্য রচনা করেছে।”

আলোচক বলেন যদিও সেমিনারে আরও অনেক কিছু বলার বা শোনার ছিল, তবে সময় ছিল সীমিত। তবে এদিন সেমিনারের শেষ বাক্য ধ্রুবজ্যোতি বলেন, “এ.আই আরও গভীরভাবে বুঝতে হবে। আর যদি আমরা না বুঝি, তাহলে এই যন্ত্র দ্বারা চালিত, মানুষকে যন্ত্রের মতো করে দেবার প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারব না।”