নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ দিন দশেক আগে খোদ বহরমপুরে জনবহুল এলাকায় দিন দুপুরে খুন হয়ে যান প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী সত্যেন চৌধুরী। পুলিশ তদন্ত করে যে দু’জনের নাগাল পেয়েছে তাদের প্রাথমিক পরিচয় তারা তৃণমূল কর্মী। লোকসভা ভোটের মুখে পুলিশের এই তত্বে জেলা জুড়ে বেড়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ।
এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেই দেখা গিয়েছিল অপরাধীদের। তবুও পুলিশ নেটওয়ার্ক তাদের নাগাল পেতে হিমশিম খাচ্ছিল। অবশেষে মূল অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “ধৃত রহিম মন্ডল মূল অভিযুক্ত। তাকে আদালত চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরায় সে দোষ কবুল করে জানিয়েছে গুলিটা সেই চালিয়েছিল।”
এর আগে মোস্তাফা মন্ডল নামে আরও একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। ধৃত দুজনেই তৃণমূল কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে। রহিমের বাড়ি মুর্শিদাবাদের নওদায়, মোস্তাফা তেহট্টের বাসিন্দা।
তবে সত্যেন চৌধুরী হত্যাকান্ডের দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রথম দিন থেকেই কংগ্রেস সক্রিয়। এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে চালতিয়া, ভাকুড়ি, স্বর্ণময়ীতে প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেছে তারা। এদিন জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “ আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলনে মুখে পরে পুলিশ বাধ্য হয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা আন্দোলন না করলে পুলিশ আজ পর্যন্ত কাউকে ধরতো না।” তিনি আরও বলেন, “আজ পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারে নি। হত্যাকারীর পরিচয় তৃণমূলকর্মী, ষড়যন্ত্রকারী কী ওই দলেরই কোনও রাঘব বোয়াল। তার বা তাদের আড়াল করতে গিয়ে পুলিশকে মাথা ঘামাতে হচ্ছে তাই তদন্ত করতে গিয়ে পদে পদে ঠোক্কর খেতে হচ্ছে পুলিশকে।”বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, “ আমরা প্রথমদিন থেকেই বলে আসছি তৃণমূলের এলাকা দখলের লড়াইয়ের বলি তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই খুন সে কথা আমরাই প্রথম বলেছি। টুকটুক করে আমার কথাই সত্যি হচ্ছে। আবারও বলছি তৃণমূল কর্মী খুন করতে পারে না নেতার নির্দেশ ছাড়া। এক্ষেত্রেও পুলিশ সেই নেতাকে ধরুক। সেই দাবি করছি।”
মুর্শিদাবাদের সাংসদ তথা নওদার বাসিন্দা আবু তাহের খান বলেন, “সমাজবিরোধীর প্রথম পরিচয় সে সমাজবিরোধী। আর সমাজবিরোধী যখনই বিপদে পড়বে তখনই শাসকদলের পরিচয় দেয়। তৃণমূল কোনও সমাজবিরোধীদের প্রশ্রয়ই দেয় না আশ্রয় তো দূরের কথা। ”