বইয়ের দামে ছ্যাঁকা, মেলায় বই কিনতে ইতস্তত পাঠক

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ বহরমপুর ব্যারাকস্কোয়ারে শুরু হয়েছে জেলা বইমেলা। ঝঞ্ঝা কাটিয়ে গুটিগুটি পায়ে হাজির শীতও। বেলা বারোটার পর থেকে বইপ্রেমী মানুষও আসতে শুরু করছেন মেলায়। রোদ পোহানোর পাশাপাশি হাতে বই নিয়ে চলছে নাড়াঘাটাও। বইয়ের সঙ্গে হরেক কিসমের দোকানও আছে বইমেলা চত্বরে। দুপুরের মিঠে রোদে বইয়ের বাজার করতে এসেছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের লাইব্রেরিয়ান। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মেলায় বাড়ছে ভিড়। ইতিউতি সমমনোস্কদের বসছে আসর, সঙ্গে আছে উপরি পাওনা গান, আড্ডা। জেলায় এই মুহূর্তে বইমেলায় ভিড় করেছেন জেলার বিভিন্ন গ্রন্থাগারের কর্মীরাও। তাঁরা নিজেদের পাঠকের জন্য খুঁজে খুঁজে নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের বই।

ধুলাউড়ি পল্লিমঙ্গল সমিতি পাঠাগারের সম্পাদক আশীষ বিশ্বাস এসেছিলেন বই কিনতে। তাঁর পাঠাগারে প্রায় পাঁচশো সদস্য। কিন্তু পাঠকের পছন্দ মতো বই কিনতে ঘাম ছুটছে তাঁর। বই কেনার জন্য সরকার থেকে এবার গ্রামীণ গ্রন্থাগারকে পনেরো হাজার টাকা, মহকুমা বা শহরের গ্রন্থাগারকে ১৮ হাজার টাকা ও জেলা গ্রন্থাগারকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছে কোন বই কত শতাংশ কিনতে হবে। কম্পিটেটিভি পরীক্ষার প্র্যাকটিস সেটের বই কেনার পর আর পাঠকের পছন্দের বই কেনা দায় হয়েছে। বইয়ের চড়া দামে অল্প বই কিনেই ফুরিয়ে যাচ্ছে তহবিল। পাঠকের সাধের বই আর কেনা হচ্ছে না। বই বিক্রেতাদের একাংশ বলছেন বিক্রেতারা অবশ্য পাঠক কমার কথা মানছেন না। তাঁদের দাবি পাঠক আসছেন, হাতে বই নাড়াচাড়া করে দেখছেন, এমনকি কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন।

মেলায় এসছেন শহরের স্কুলের শিক্ষিকা পিয়ালী দাস বই কিনতে এসে মন ভার। বইয়ের দাম যে আক্কাড়া। আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় বইয়ের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে বলে মানছেন পুস্তক বিক্রেতারাও। কাগজের দাম থেকে ছাপার কালি সবেরই দাম বেড়েছে। পাশাপাশি আগের তুলনায় পাঠক কমেছে। ফলে একটি বই একসঙ্গে অনেক ছাপাতে চাইছেন না প্রকাশক। তার কোপ পড়েছে বইয়ের দামে। তবে তুলনামূলকভাবে দাম তেমন বাড়েনি বলেই দাবি বিক্রেতাদের। বইমেলার একাধিক পুস্তক বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বই মেলায় সাধারণত ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু পাঠক টানতে কেউ কেউ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন। সেই দামও কি জুড়ে যাচ্ছে বইয়ের দামে? এই নিয়ে চলছে কানাঘুষোও। আর এই দাবি পাল্টা দাবির ফাঁক গলে বইমেলার চারদিনে প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বইমেলা কমিটি।