মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ একদিকে দুই বিধায়ক, একদিকে দলের নেতারা। গুরুত্ব পাবে কারা ? কাদের কথায় চলবে সংগঠন ? এই বিতর্কে কার্যত আড়াআড়ি বিভিক্ত বিজেপি শিবির। নেতৃত্ব অদক্ষ , অযোগ্য। যাদের সামনে আনা হচ্ছে, অনেকেরই বোঝাপড়া রয়েছে তৃণমূলের সাথে। এই অভিযোগ এনে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেন দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক, মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশংকর ঘোষ। রবিবার বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে গৌরী শংকর ঘোষ ঘোষণা করেন, দলের রাজ্য সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে গৌরীর পাশেই ছিলেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র ওরফে কাঞ্চন । গৌরী বলেন, দলে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বিধায়কদের। জেলায় দল চালানো, কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গৌরী। কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্যের নেতাদেরও।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫১ জন মণ্ডল প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করেছে বিজেপি। শনিবার ঘোষণা হয় মুর্শিদাবাদ পৌর মন্ডলের সভাপতির নামও। মণ্ডল সভাপতিদের নাম নিয়ে দলে দানা বাঁধে অসন্তোষ।
গৌরী শঙ্কর ঘোষের এদিন ইস্তফাপত্রে জানিয়েছেন ৫ এপ্রিল দলের নেতাদের বৈঠকে ৫১ জন মন্ডল সভাপতির নাম সর্বসম্মতিক্রমে ঠিক হয়েছিল । তালিকা প্রকাশিত হতে দেখা যায় ১৮ টি নাম সভাপতি নিজের ইচ্ছায় পরিবর্তন করেছেন। বিষয়টি রাজ্য সংগঠন মন্ত্রী অমিতাভ চক্রবর্তী ও জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারের কাছেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু গুরুত্ব দেয় নি কেউ। গৌরীর দাবি, দলে বিধি ভেঙেছেন এই দুই নেতাই। এই কারণকে সামনে রেখেই গৌরী দাবি করেছেন, রাজ্য সম্পাদক পদে থাকার কোন যৌক্তিকতা নেই।
২০২১ সালের নির্বাচনের পর হওয়া উপনির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির কারণ হিসেবে দলের নেতৃত্বকেই দায়ী করেছেন গৌরী। গৌরী শঙ্কর ঘোষের দাবি, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনি পুনর্বিন্যাস হচ্ছে না দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ সহ অধিকাংশ জেলাতেই। গৌরীর সাফ অভিযোগ, “ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অদক্ষ, দুর্বল কার্যকর্তাদের সংগঠনের দায়িত্ব দিয়ে তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে”।
২০১৬ থেকে ২০২১ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজেপি’র দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন গৌরী। পরে রাজ্য সম্পাদক হওয়ায় জেলা সভাপতি হন শাখারভ সরকার। দল চালানো নিয়ে এবং পৌরসভা নির্বাচন নিয়েও কার্যত নতুন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন গৌরী। গৌরীর সাথেই বিজেপি’র রাজ্য কর্মসমিতি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দুই সদস্য দীপঙ্কর চৌধুরী ও বানী গাঙ্গুলি।
গৌরী বলেন, “ রাজ্যের যারা শীর্ষস্তরে বসে রয়েছে তারা নীচুতলার কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না ”। গৌরীর ক্ষোভ, ফোন করলে ফোন তুলছেন না নেতারা। দলের জেলা সভাপতিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্রও। সুব্রতর দাবি, দলকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করছেন দলের মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলার সভাপতি। সভাপতি তুঘলকি রাজত্ব চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ বিধায়কের।বিজেপি’র পুরোনো কর্মীদের নিয়ে প্যারালাল সংগঠন তৈরীর হুমকিও দেন দুই বিধায়ক।