মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ আগামী কাল থেকে শুরু হচ্ছে ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব । হবে মনের মানুষের খোঁজ। শনিবার সকালে প্রভাতফেরীর মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হবে । সকাল ১১ টায় লালবাগের ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ পার্কে হবে উদ্বোধন । দু’দিন ধরে অনুষ্ঠান চলবে এই আম বাগানেই। প্রথম দিন দুপুর ২ টো অবধি আমগাছের তলাতেই চলবে গান, বাজনা। বাউল ফকির গানের সুর বোনা হবে শীতের দুপুরজুড়ে । বিকেল ৪ টে থেকে শুরু হবে মূল মঞ্চের অনুষ্ঠান । রবিবার ভাগীরথীর তীরে খোলা আকাশের নীচে বসবে গানের আসর। এরপর ফের আম বাগানে ফিরবেন শিল্পীরা। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টো অবধি চলবে গান। বিকেল ৪ টের শুরু হবে মূলমঞ্চের অনুষ্ঠান।
আগের বছর নবাবের জেলা মেতেছিল বাউল ফকির উৎসবে। ১ ও ২ এপ্রিল বাউল ফকির উৎসবে শামিল হয়েছিলেন দুই বাংলার বহু গুণীজন । মুর্শিদাবাদ শহরের ঐতিহাসিক পার্ক আমবাগানে মাটির মঞ্চে গান গেয়েছেন অনাথ বন্ধু ঘোষ, মনসুর ফকির, সাধন দাস বৈরাগ্য, মাকি কাজুমিরা। ওপার বাংলার টুনটুন ফকির বুনেছেন মিলনের সুর। জয়দেবের আখ্যান, মধু ঋতু বসন্তের বর্ণনা থেকে
ফকিরি গানে বারবার ভেসে গিয়েছে নবাবের শহর । প্রেম তরঙ্গে ভেসেছেন শিল্পী থেকে শ্রোতারা। এর বছর ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদের লালবাগ ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ পার্কে এই উৎসব চলবে। প্রেক্ষাগৃহে নয় গতবারের মতো এবারও কোনও লোকশিল্পীরা তাঁদের মর্জি মাফিক আমবাগানে বসে গান গাইবেন । তাঁদের জীবনের নানান গল্প শোনাবেন।
এবারও এপার বাংলার সাথে সাথে ওপার বাংলার শিল্পীরাও অংশ নেবেন ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসবে। উৎসব নিয়ে ২০ তারিখ সাংবাদিক সম্মেলন হয় বহরমপুরে সেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, মুর্শিদাবাদ হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভলপমেন্ট সোসাইটির সম্পাদক স্বপন কুমার ভট্টাচার্য, বহরমপুর গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা ডঃ হেনা সিনহা, ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব কমিটির সদস্য সুপ্রিয় ব্যানার্জী। এবারের উৎসবে মুর্শিদাবাদের মানুষের সাড়া পেয়ে উচ্ছ্বসিত সকলে। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন , মুর্শিদাবাদের আলকাপ, বাউল ফকিরি গান, মালদার গম্ভীরায় জাতপাতের বেড়া নেই। লোক সংস্কৃতির উঠোনে সব ধর্মের মানুষজন একসঙ্গে পাত পেড়ে খান। একসঙ্গে ঘুমোন। আসরে একসাথে গান ধরেন -‘ শুনহে মানুষ ভাই —-‘ এদের একটাই পরিচয়, তাঁরা শিল্পী। এই ভাবনার অনুসারী হয়েই এবার ফের অনুষ্ঠিত হবে ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে অভিনেতা বাদশা মৈত্র জানিয়েছেন, শুধু গান নয়, যাপনেরও উদযাপন হবে এই উৎসবে। মানুষে মানুষের মধ্যে সব ভেদ ঘোঁচানোর আহ্বান জানবে এই উৎসব।
উদ্যোক্তারা এও জানান, পরিবেশ বান্ধন বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে উৎসব প্রাঙ্গন সাজানো হচ্ছে। থাকছে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী থেকে সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান। উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য শুক্রবার বিকেল থেকেই মুর্শিদাবাদে আসতে শুরু করেছেন বাউল, ফকিররা। চলছে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি।