Berhampore Sufal Bangla বাংলায় একটি প্রবাদ বাক্য সর্বদা চলে, সেটি হল মাছে ভাতে বাঙালি। কিন্তু বর্তমান অগ্নিমূল্যের বাজারে সবজি কিনতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা আমজনতার। বহরমপুরের (Berhampore) প্রতিটি বাজার ঘুরে দেখলে জানা যাবে, চড়া দাম সব কিছুর। আলু প্রায় ৩৫-৪০ টাকা কিলো। পেঁয়াজ প্রায় ৪০-৪৫ টাকা কিলো। আদা-রসুন প্রায় ২০০-২৫০ টাকা কিলো। লঙ্কা প্রায় ১০০-১২০ টাকা কেজি। এবং টমেটো প্রায় ৮০-৯০ টাকা কেজি।
এমত পরিস্থিতিতে এক জায়গায়তেই কম দামে সবজি পাওয়া যাচ্ছে। সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (West Bengal Govt.) সুফল বাংলা। একমাত্র যেখানে বাজারের দর থেকে প্রায় ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় সব সবজি। হ্যাঁ ! ভাবলেই অবাক লাগবে। যেখানে বাজারে সব জিনিসের এত দাম, সেখানে ৫ টাকা কমে মিলছে সবজি। কিছুটা হলেও নিস্তার পাচ্ছেন শহরবাসীও বলেই মনে করা হচ্ছে। সবজি বাদেও পাওয়া যায় সমস্ত ধরণের মুদিখানার জিনিস। চাল, ডাল, আটা সব কিছুই কমবেশি বহরমপুরের এই সুফল বাংলায় উপলব্ধ।
Berhampore Sufal Bangla কিন্তু তার পরেও কেন ধুঁকছে বহরমপুরের সুফল বাংলা ?
এই প্রশ্নের উত্তরে স্টোর ম্যানেজার সুজয় মণ্ডল জানান, “বর্তমানে আমাদের সুফল বাংলায় প্রায় সব সবজি উপলব্ধ। আলু, পেঁয়াজ, আদা-রসুন, ভেন্ডি। যখন যে সবজি পাওয়া যায়, তখন সেটি এখানে নিয়ে আসা হয়। শুধু তাই না, বাজার দামের থেকে প্রায় ৪-৫ টাকা কমে এখানে মাল বিক্রি করা হয়”। তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি আমাদের নিজেস্ব ঘরে পেষা সর্ষের তেল থেকে সুফল বাংলার ডবল ফিল্টার্ড তেলও উপলব্ধ। সেগুলির দাম লিটার প্রতি ১৪৮ টাকা। এত ভালো জিনিস পাওয়া যায় তাও ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। কারণ এই সুফল বাংলা যদি স্বর্ণময়ী এলাকায় হত বা যেকোনো ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। তাহলে এর চাইতে আরও বেশি ক্রেতারা এখানে আসত”।
সকাল ৮টায় খোলা হয় সুফল বাংলার গেট খোলা থাকে ১২ ঘণ্টা। কিন্তু সারাদিনে লোক আসে হাতে গোনা। ফলে নষ্ট হয় অনেক সবজি। বাজারে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সবজির ঘাটতি থাকায় বাড়ছে এই দাম বলে মনে করছেন সবজি ব্যাবসায়িরা। আগামী দিনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মাত্র ১৪টি স্টল দিয়ে শুরু হয় এই প্রকল্প। রাজ্যের মানুষকে ঊর্ধ্বমুখী শাক-সবজির দামের থেকে রেহাই দিতেই রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। কিন্তু অগ্নিমূল্য বাজারে অধিকাংশ সবজিই সেঞ্চুরি পার করেছে। আলু পর্যন্ত ৪০ টাকা কেজি হয়ে গিয়েছে। আলু-সিদ্ধ ভাত খাওয়াও এখন দুস্কর হয়ে গিয়েছে। হু হু করে দাম বেড়ে গিয়েছে সব সবজির। ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে কিছুই বাজার হচ্ছে না। সেখানেই সুফল বাংলায় আলু পাওয়া যায় ৩০-৩২ টাকা কিলো। পেঁয়াজ ৩৮-৪০ টাকা এইরকমই বাদবাকি জিনিসের দাম ও কমবেশি বাজার থেকে কম রয়েছে।
ভাকুরির বাসিন্দা সাবিব মণ্ডল তিনি বহরমপুর আসলেই সুফল বাংলা থেকেই সবজি বাজার করেন। কারণ এখানে ফ্রেশ ও কমদামে সবজি পাওয়া যায়। তিনি জানান, “বাজারের যা অবস্থা হাজার টাকার নিচে বাইরে বাজার করতে যাওয়াই যায় না। সবকিছুর দাম বাড়ছে। এইভাবে চললে খাবো কী ? তাই বহরমপুরে আসলে আমি এখান থেকেই সবজি বাজার করে নিয়ে যায়। কারণ এখানে বাজারের থেকে প্রায় ৫ টাকা কম দামে পাওয়া যায়”।
অনেকে অভিযোগ করেছেন ফাটকা কারবারিদের জন্যই সবজির দাম হু হু করে বাড়ান হচ্ছে। বাজারে টাস্ক ফোর্সে কেউ ঘুরছে না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সকলে। টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা ঘুরলেই অনেক দাম নিয়ন্ত্রিত হতে পারে বলে দাবি করেছেন সাধারণ মানুষ। সেখানে যদি সুফল বাংলার প্রচার পায় তাহলে সুবিধা হবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরও।