Berhampore Sen’s House রথেই দেবীর আবাহন, বহরমপুরের (Berhampore) অন্যতম প্রাচীন সেন বাড়িতে প্রথা মেনে হল কাঠামো পুজো। রবিবার রথের সকালে ঠাকুর দালানে ব্যস্ততা শুরু হয়। সমস্ত নিয়ম মেনে চলে পূজার্চনা। ঢাকে পড়ল কাঠি। শঙ্খ ধ্বনি, উলুর ধ্বনি, ধুপের গন্ধে দেবীর আবাহন। সোজারথেই বহরমপুর শহরের খাগড়া ৩ নম্বর গিরিজা চক্রবর্তী লেনের সেন বাড়ির আদি দুর্গা পুজোর সূচনা হয়ে গেল। সেন বাড়ির (Berhampore Sen’s House) পুরোহিত সৌমিত্র আচার্য্য তিনি জানান, ‘এই পুজো বহু প্রাচীন পুজো। তাই সেই মতন নিয়ম মেনেই করা হয়। রথের দিন কাঠামো পুজো করা হয়। এই কাঠামো পুজোর মূল লক্ষ আমি দেবি দুর্গাকে যে কাঠামোতে বসাতে চাইছি। সেটি যেন শুদ্ধ হয়’।
পরম্পররা অনুসারে পুরোহিত ও কারিগর দ্বারা প্রতিমার কাঠামোতে গঙ্গামাটি প্রলেপের মধ্য দিয়ে দুর্গাপুজোর সূচনা হল। সমস্ত নিয়ম মেনে চলে পূজার্চনা। একেবারেই সাবেকিয়ানা বজায় রেখে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে সেন পরিবারের দেবী দুর্গার আরাধনা। রথের শুভ দিনে সেন বাড়ির অন্দরে যেন দুর্গার আগমনীর সুর। জানা যায় ১৮৯৬ সালে রাধাকৃষ্ণ সেন এই পুজোর সূচনা করেন ।
আগে এখানে সন্ধি পুজোয় শূন্যে গুলি ছোড়া হলেও এখন তা বন্ধ হয়েছে। তবে তা ছাড়া অন্য কোন রীতিতে একটুকু ছেদ পরেনি সেন বাড়ির পুজোয়। সেন বাড়ির সদস্য সুবীর সেন তিনি জানান, ‘রথযাত্রার পূর্ণতিথিতে আজকে আমাদের প্রাচীন প্রথা মেনে মা দুর্গার কাঠামো পুজো সম্পূর্ণ করা হল। ১৮৯৬ সালে অভিভক্ত বাংলার জজ বাবু রাধা কৃষ্ণ সেন এই বাড়িতে দুর্গা পুজোর প্রচলন করেন। তবে থেকে সেই নিয়মেই সেইভাবেই এখনও আমরা দুর্গা পুজো করে চলেছি’।
এই সেন বাড়ির পুজোতে মহিলাদের ভূমিকা বরাবরই উল্লেখযোগ্য। এ বাড়ির পুজো শুরু হয় এক মহিলার ইচ্ছানুসারে। এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে ইতিহাস। পুজোর বৈশিষ্ট্য, প্রতিমার বৈশিষ্ট্য, ভোগের নিয়ম, পুজোর মাহাত্ম, এবং মহিলাদের ভূমিকা- সব কিছুই বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। যে ধারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। সোজারথে কাঠামো পুজো হলেও ভাদ্র মাসে বন্ধ থাকে প্রতিমা তৈরির কাজ। মহালয়ার দিন হয় মহামায়ার চক্ষু দান। এরপর ষষ্টীতে শুরু হয় পুজো। তবে সোজারথেই এই বাড়ির সদস্যদের কাজ পুজো শুরু হয়ে যায়।