নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ “এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।” কবি সুকান্ত এই লাইন লিখেছিলেন অনেকদিন আগে। কিন্তু আমরা কি বুঝতে পেরেছি এই লাইনের মর্মার্থ? শিশু পড়বে, শিশু খেলবে, শিশু আঁকবে ছবি যা ইচ্ছে তাই। মুর্শিদাবাদ জেলার দশম শ্রেণির এক ছাত্র সন্দীপ বিশ্বাস, তাঁর আঁকা ছবি স্থান পেয়েছে একটি ট্যাবলোর ব্যানারে। সেই ট্যাবলো ঘুরবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। এভাবেই এক কিশোরের আঁকা ছবিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাবে শিশুশ্রম প্রতিরোধের বার্তা।
‘শিশুশ্রম’ একটি সামাজিক রোগ। যখন সমাজের কোনও বিশেষ শ্রেণির শিশুকে রুজি-রুটির টানে পড়াশোনা ছেড়ে কাজের খোঁজে রাস্তায় নামতে হয়, তখন বুঝে নিতে জবে সেই সমাজের গভীরে নিহিত আছে জ্বলন্ত এক সমস্যার বীজ। শিশুশ্রম আজকের অত্যাধুনিক সমাজের একটি ভয়ঙ্কর অভিশাপ। আজও আমাদের অনেককেই হয়তো রাস্তায় বেড়িয়ে দিনের প্রথম কাপ চা নিতে হয় কোনও শিশুশ্রমিকের হাত থেকেই। কিন্তু এভাবে আর কদ্দিন!
২০০২ সালে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন’ সমাজের এই জ্বলন্ত সমস্যাকে শনাক্ত করে, তা প্রতিরোধ ও সামাজিক সচেতনতার লক্ষ্যে ১২ই জুন দিনটিকে ‘ওয়ার্ল্ড ডে এগেন্সট চাইল্ড লেবার’ পালন করে আসছে। রাষ্ট্রপুঞ্জও এই দিনটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ সবার জন্য সোশ্যাল জাস্টিস, এবং এভাবেই চাইল্ড লেবারের দমন সম্ভব। ‘Social Justice for All. End Child Labour!’ বিশ্বজোড়া এই থিম পালন করছে।
আজ বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস দেশের তথা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি পালিত হল মুর্শিদাবাদেও। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিনির উদ্যোগে একটি ট্যাবলো সূচনার মাধ্যমে দিনটি পালন করা হল। চারদিন ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বাচ্চাদের শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে, স্কুলে যাওয়ার পক্ষে ও শিশুশ্রম আইন সম্পর্কে সচেতন করা হবে এই ট্যাবলোর মাধ্যমে। ট্যাবলোটি জেলার পাঁচটি সাব ডিভিশনেই ঘুরবে আগামী চারদিন ধরে। এই ট্যাবলোর যাত্রা শুরু হল আজ বহরমপুর প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে। এই ট্যাবলো থেকে জেলাজুড়ে শিশুশ্রম বন্ধ করতে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে।