শৌচালয়ের সমস্যায় ভুগছেন বহরমপুরের পথচারীরা। মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে আগের থেকে পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটেছে। সুন্দরী ভাগীরথীর ধারে গড়ে ওঠা ওই শহর দেখতে সুন্দর হয়েছে। কিন্তু, এখনও অনেক জায়গায় টয়লেট, কিছু জায়গায় নিকাশির সমস্যা, পার্কিং এর সমস্যা খুব ভোগাচ্ছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এই শহরে প্রতিদিন হাজারে হাজারে মানুষ আসেন। অনেকে আসেন কাজের জন্যে। অনেকে চিকিৎসার জন্যে। অফিসিয়াল কাজেও আসেন অনেকে। বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। তাঁর মধ্যে বহরমপুর শহরের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র গোরাবাজারে শহিদ সূর্যসেন রোড থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় ২ কিমি রাস্তায় কোথাও টয়লেট নেই বলে বাসিন্দাদের বক্তব্য। তাঁদের কথায়, এর ফলে বাজার করতে বেরিয়ে তাদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এই সমস্যা বেশি করে ভোগায় প্রবীণ নাগরিকদের। অনেকে প্রকৃতির ডাকে রাস্তার ধারেই কাজ সারছেন। যা পরিবেশের পক্ষেও ক্ষতিকর ও দৃষ্টিকটু।
মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, আরটিও মোড় থেকে কমার্স কলেজ মোড় পর্যন্ত কোথাও টয়লেট নেই। স্থানীয় এক চায়ের দোকানদার বলেন, এই এলাকায় অনেক সরকারি অফিস আছে। কাজের কারণে বাইরে থেকে লোক আসেন। বিশেষ করে মহিলারা সমস্যায় পড়েন। আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনুরোধ করে লাগোয়া সরকারি অফিসগুলোতে ব্যাবস্থা করে দিই। স্বর্নময়ী রোডের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, সেখান থেকে একেবারে হাসপাতাল পর্যন্ত কোথাও টয়লেট নেই। স্বর্নময়ী সুপার মার্কেটে একটা ছিল। ৬ মাস আগে সেটা ভেঙে ফেলা হয়েছ। তবে সেখানে সাধারণ মানুষের অসচেতনতা ছিল। নোংরা করে রাখা হত। সবজি বাজারের ভিতরে একটা রয়েছে। খাটিকতলা মোড়ের প্রবীণ বাসিন্দা সুবীর মুখার্জী, স্বর্নময়ী রোডের প্রভাস চৌধুরী, উকিলাবাদ এলাকার পরিতোষ ভট্টাচার্যরা জানিয়েছেন, ওয়াইএমএ মাঠ ও সংলগ্ন এলাকাতেও কোনও শৌচালয় নেই। যাতে তাঁরা অসুবিধায় পড়েন। এখানে খেলাধুলা করতে আসেন অনেকে। তাঁদের অসুবিধা হয়। বিদ্যাসাগর মোড়ে এক ফূল বিক্রেতা বলেন, ওই এলাকাতে কোনও শৌচালয় নেই।
এদিকে, বহরমপুরের জনৈক বাসিন্দা জানিয়েছেন, খাগড়া বড়মুড়ির ধার ভৈরবতলা থেকে চালতিয়া পর্যন্ত নিকাশির সংস্কার হওয়া দরকার। সেখান থেকে নিকাশির জল চলে যায় ভান্ডারদহ বিলে। তা না হলে জল জমে যাচ্ছে। বেশি বৃষ্টি হলেই সমস্যা হওয়া যায়। এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, গড়ের মাঠ সংস্কার হওয়া দরকার। আরেকজন তাঁকে শুধরে দিয়ে বলেন, এখন ওটা স্টেডিয়াম । প্রথম বক্তা তখন বলেন, আমার ৮০ বছর বয়স হয়ে গেলো। ওই নামেই জানি। এক সময় সেখানে ব্রিটিশদের প্লেন নামত। এখন হেলিকপ্টার নামে। গাড়ী রাখা থাকে দেখি। খেলাধুলো হক ভালোভাবে সেটাই চাই। এক বাসিন্দার কথায় সেভাবে পার্ক চোখে পড়ছে না ওই এলাকায়। তবে, আশেপাশে এল ই ডি আলোর ব্যাবস্থা, সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। পাশাপাশি, মেডিক্যাল হাসপাতালের বাইরে পার্কিং এর সমস্যা অসুবিধায় ফেলছে। গাড়ি পার্কিং এর জায়গা না থাকায় অনেকে রাস্তার মধ্যেই গাড়ি রেখে দিচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যাতেই একটি টোটো চালকের সঙ্গে এক বাইক আরোহীর ঝামেলা বাধে দোকানদাররা মিটিয়ে দেন। এটা রোজনামচা বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। নিমতলা পাঁচমাথা মোড়ে পার্কিং এর সমস্যা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। রাস্তায় যেখানে সেখানে গাড়ি লাগানো থাকে। ফলে পথচারীদের যাওয়ার জায়গা থাকে না। রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে চিন্তিত অনেকে। সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে অবিলম্বে গুরুত্ব দিক এমনই চাইছেন বাসিন্দারা।