Atanu Ghosh Case বহরমপুরে পুলিশের তাড়ায় ভাগীরথিতে জলে ডুবে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য সরকারকে যুবকের অভিভাবকদের ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন West Bengal Human Rights Commission । রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস জ্যোতির্ময় ভট্টচার্য Justice (Retd.) Jyotirmay Bhattacharya , জাস্টিস মধুমতি মিত্র এবং বাসুদেব ব্যানার্জির কমিশন এই সুপারিশ করেছে।
২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পুলিশের সামনেই ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দেয় বহরমপুর কলেজের ছাত্র অতনু ঘোষ। পরের দিন উদ্ধার হয় দেহ। কমিশনের সন্তোষপ্রকাশ করেছে ছাত্রের পরিবার। অতনু ঘোষের বাবা নির্মল ঘোষ বলেন, “ এই সুপারিশে আমি সন্তুষ্ট। তবে সরকার বা পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয় নি। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত সেই অপরাধীদের শাস্তি আমি চাই”।
৫ আগস্ট পুলিশের সামনেই ভাগীরথী নদীতে ঝাঁপ দেয় বাইশ বছরের অতনু ঘোষ। সেদিনই থানায় মিসিং ডায়রি করেন ওই ছাত্রের মা। ৬ আগস্ট সকাল থেকে নদীতে ছাত্রের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। সন্ধ্যায় কৃষ্ণনাথ কলেজ ঘাটের কাছে উদ্ধার হয় অতনু ঘোষের দেহ। ৯ আগস্ট এই বিষয় নিয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। জেলা পুলিশের কাছে চাওয়া হয় পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট, চাওয়া হয় বিস্তারিত তদন্তের রিপোর্ট।
পুলিশ রিপোর্টে দাবি করা হয়, বহরমপুর থানার বুন্দাইপাড়ার বাসিন্দা অতনু ঘোষ পুলিশের গাড়ি দেখে ফুটপাথ থেকে নদীর দিকে দৌড়াতে শুরু করে। থেমে যায় পুলিশের গাড়ি। ওই যুবককে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। ঐ যুবককে খুঁজে না পেয়ে সেখান থেকে চলে যান পুলিশ কর্মীরা।পরে উদ্ধার হয় যুবকের দেহ।
পুলিশি রিপোর্ট এবং ছাত্রের পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দেখে মানবাধিকার কমিশনের lnvestigating Wing শুরু করে তদন্ত। ৩০ নভেম্বর জমা হয় সেই রিপোর্টও। মৃতের বাবা, তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গেও কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। কমিশনের পক্ষ ডেপুটি পুলিশ সুপারের তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
Atanu Ghosh Case কী পর্যবেক্ষণ মানবাধিকার কমিশনের ?
কমিশনের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের সব কথা মেনে নিলেও এটা বোঝা যায় যে ওই ঐ ছাত্রের প্রাণ বাঁচাতে কিছুই করে নি পুলিশ। পুলিশের কাজকেও সন্দেহ ও অভিযোগের বাইরে রাখছে না মানবাধিকার কমিশন। পুলিশ চাইলে বাঁচাতে পারত ওই ছাত্রের প্রাণ।
মৃতের পরিবারের জন্য ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি যে পুলিশ কর্মীদের উপস্থিতিতে ওই ঘটনা ঘটে তাঁদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরুর সুপারিশ করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। অসম্পূর্ণ রিপোর্ট দেওয়ায় মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার ডিএসপি ( ডি অ্যাণ্ড টি) ’কেও সতর্ক করেছে মানবাধিকার কমিশন ।
Atanu Ghosh Case কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুলিশ চাইলেই প্রাণ বাঁচাতে পারত ওই যুবকের। কমিশনের পর্যবেক্ষণ, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের ভূমিকা খুবই আশ্চর্যের, সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে এটা আশা করাই যায় না। একটি জিডি’কে সামনে এনে পুলিশ নিজের কান্ড আড়াল করতে চাইছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছে কমিশন। মানবাধিকার কমিশনের দাবি, পুলিশ নিজের কাজ লুকোতে চাইছে। সুপারিশে সন্তুষ্ট মৃতের পরিবার। কিন্তু কবে মিলবে ন্যায় বিচার ? থাকছে প্রশ্ন।