‘মমতা বেইমান’ অধীর দাবির পাল্টা ‘তরমুজ’ তকমা অপূর্বর

Published By: Madhyabanga News | Published On:

বিদ‍্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ বঙ্গে আসন বন্টনের আলোচনায় সোনিয়া গান্ধীকে আসতে হবে তৃণমূলের দরজায়। তিনি আসলে তবেই বঙ্গে দু’য়ের বদলে তিনটি আসন কংগ্রেসকে ছাড়ার কথা ভেবে দেখতে পারে ঘাসফুল শিবির। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এমনটাই দাবি। আর এই শর্তারোপের পদ্ধতি নিয়েই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ‘বেইমান’ বলে সরাসরি ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন তিনি। নিজের দাবিকে মান্যতা দিতে অধীর ছুটে গিয়েছেন ইতিহাসের অলিন্দে।১৯৯০ সালের ১৬ অগস্ট। হাজরা মোড়ে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করছেন তৎকালীন কংগ্রেস যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩৩ বছর আগের সেই সভায় মমতার ওপর লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হন জনা কয়েক দুষ্কৃতি। তাদের আঘাতে মাথা ফাটে মমতার। চিকিৎসার কারণে ভর্তি থাকতে হয় হাসপাতালে। সেদিনের সেই ঘটনার কথা বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। হাজরা মোড়ের ওই ঘটনার পরেই রাজীব গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর নজরে আসেন ও নেত্রী হয়ে ওঠেন বলে দাবি করেন অধীর। তিনি বলেন, “ সেদিন যতটা না রক্ত ঝড়েছিল তার থেকে বেশি নাটক হয়েছিল। মহিলার উপর আক্রমণের কারণে সেদিন রাজীব গান্ধী এই মহিলাকে যুবনেত্রী বানিয়েছিলেন। এটাই তার উত্থানের সূত্রপাত।”আরও বলেন, “কতবড় বেইমান সেই মহিলা। কত বড় তার ঔদ্ধত্য যে যাঁরা রাজনীতিতে তাকে মানুষ করেছেন তাঁদেরকে বলছে ফোন করতে। মুর্খের স্বর্গে বাস করছে। আমার নেত্রী সোনিয়া গান্ধী আসন ভিক্ষার জন্য ফোন করবেন না।”
এই ঔদ্ধত্যের পতন হবে বলেও দাবি করেন অধীর।

একইসঙ্গে অধীর সাংবাদিকদের সামনে ফের বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের “অশুভ আঁতাত”এর অভিযোগ তুলেছেন। তৃণমূল ও বিজেপি মিলেমিশে ভোট করে আসলে ভোট ভাগাভাগি করবে বলে দাবি করে অধীর বলেন, “ আমাদের দেশে আগে মন্দির ছিল না, মসজিদ ছিল না, সমুদ্র ছিল না, পাহাড় ছিল না। এরা ( নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ) আসার পর সব তৈরি হল। গঙ্গাসাগর মেলা তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে, অযোধ্যা তৈরি হয়েছে মোদির আমলে। প্রচারটা এইরকমই চলছে মোদি আর দিদির। ২০১৯ ও ২১ সালের বাংলার ভোট ভাগ করে মোদি মমতা লাভবান হয়েছে। তার পুনরাবৃত্তি করতে চাইছে মিলেমিশে।”তবে অধীরকে পাল্টা ‘তরমুজ’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার। তিনি বলেন, “ মার্কসবাদী নেতা রাম চ্যাটার্জী থেকে কংগ্রেসের সৌমেন মিত্র পর্যন্ত সকলকেই নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে ফেলে দিয়েছেন অধীর। তাই বেইমান শব্দ ওর জীভে নয় মনে গাঁথা আছে।” একসময় কংগ্রেসের একাংশ বাম সরকারের আমলে বামেদের সঙ্গে কিছু নেতার “দোস্তি”র কারণে তরমুজ বলে নিজের দলের নেতাদের কটাক্ষ করতেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে অপূর্ব বলেন, “ আসলে উনি যে তরমুজ তা বোঝাতে কসুর করেন না।”তৃণমূল ও বিজেপির আঁতাতের পাল্টা দাবি করে অপূর্ব বলেন, “ দিল্লির কংগ্রেস নেতারা বিজেপি বিরোধী আর বঙ্গে অধীরকে নিরাপত্তা দেয় বিজেপি। তৃণমূল বিজেপি বিরোধী বলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তারা বাংলায় তাদের শাখা অফিস খুলে তৃণমূল নেতাদের লাগাতার পেছনে লাগছে। মানুষ সব দেখছে। তৃণমূল বিজেপির পক্ষে না অধীর বিজেপির প্রোডাক্ট।”