নিজস্ব সংবাদদাতা, কান্দিঃ দোকানের শাটার হাফ নামানো। শাটার তুলেই চোখে পড়ল ছড়িয়ে ছিটিয়ে খালি গয়নার বাক্স। খোলা অবস্থায় লকারগুলি। কোনদিন ভাবতেও পারেন নি মালিক। শুক্রবার সকালে চোখ খোলা মাত্রই চক্ষু চড়কগাছে উঠে যায় মালিকের। রাতের অন্ধকারে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ভরতপুরে। মুর্শিদাবাদের ভরতপুর পুলিশ স্টেশন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সোনার দোকানে ঘটেছে এই চুরির ঘটনা। শুক্রবার সকালে এলাকাবাসী দেখেন দোকানের তালা ভাঙা অবস্থায় মালপত্র বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। তখনই তিনি অন্যদের খবর দেন।
এলাকাবাসী পেশায় রংমিস্ত্রি সইদুল সেখ জানান, “সকালে আমি কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ছিলাম। আমার বাড়ি একটু দূরেই। যেতে গিয়ে দেখি এই সোনার দোকানের শাটার অল্প করে খোলা। দোকানের কিছু জিনিসপত্র বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে রয়েছে। আর দোকানের ভেতর লাইটও জ্বলছে। বুঝতে পারলাম কিছু একটা ঘটেছে। সঙ্গে সঙ্গে জানায় দোকানের মালিককে। ওঁরা এসে দোকান খোলা মাত্রই চোখে পড়ল সব শেষ। চোরেরা এসে সব নিয়ে চম্পট দিয়েছে। ভরতপুর থানা ঢিল ছোড়ার দূরত্বেই। এখানে পুলিশি সক্রিয়তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।”
রীতিমতো দোকানের শার্টার ভেঙে ভিতরে ঢুকে সব লন্ডভন্ড করে দুষ্কৃতিদের দল। মা ও ছেলে মিলে চালাতেন এই সোনার দোকান। এক নিমেষে সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। ভরতপুরের এই সোনার দোকান থেকে প্রায় ৬০লক্ষ টাকার সোনার গয়না চুরি যায় বলে জানিয়েছেন দোকানের মালিক। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক শাবিনা ইয়াসমিন জানান, “প্রায় সমস্ত সোনার জিনিস চুরি গিয়েছে। এই এলাকায় যে আমার একার দোকান তাও না। এবং আমার দোকান থেকে ৫০ মিটার দূরত্বেই ভরতপুর থানা। আমার প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার জিনিস চুরি গিয়েছে।” শুক্রবার সকালে এই ঘটনা সামনে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ভরতপুর থানা সংলগ্ন লড়াইডাঙ্গা এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি সোনার দোকান। এই চুরির ঘটনার পরে আতঙ্কিত এলাকার ব্যবসায়ীরা।
ভরতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সুরাজ সরকার জানান, “বিগত ১৫ বছরে এই এলাকায় এমন দুঃসাহসিক চুরি হয় নি। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।” রাতের অন্ধকারে প্রায় ৬ জনের বেশি দুস্কৃতীদল আগ্নেয়াস্ত্র সহ এই চুরির অভিযান চালায় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ভরতপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন বলে জানা গিয়েছে।