ঋত্বিক দেবনাথ, বহরমপুরঃ ‘বন্ধু চল ইস্কুলে। বন্ধুরা সব ঠিকই ছিল। ছিল না শুধু ইস্কুলবাড়িটা।’ গতবছর অক্টোবরে শেষ রেগুলার ক্লাস হয়েছে রাজ্যের সরকারী হাইস্কুলগুলিতে। তারপরে লম্বা দু’মাসের গ্যাপ। নতুন বছরে নতুন ক্লাসে এল পড়ুয়ারা। শহর বহরমপুরের স্কুলগুলিতে দেখা গেল সেই ছবি। দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে, আবার জেলার স্কুলবাড়িগুলিতে দেখা গেল ছাত্রছাত্রীদের চেনা ভিড়। শোনা গেল চেনা কোলাহল। মাঝের সময়ে বাড়িতে বসে স্কুলের জন্য মনকেমনের সুরও উঠে এল পড়ুয়াদের গলায়।
তবে শেষমেষ স্কুলে ফিরে ভালোই লাগছে জানাল নিজেরাই। বহরমপুর লিপিকা মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ইফতিকা আহমেদ জানাচ্ছে, “স্কুল ছুটি থাকায় বাড়িতে থাকা এক রকম অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। মাস দুয়েক বাড়ির লোকেদের সাথে অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি। কিন্তু স্কুলের বন্ধুদের জন্য সবসময় মন খারাপ করত।”
২০২৩ সালের অক্টোবরের চতুর্থীর দিন অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর ক্লাস হয়ে সাময়িকভাবে ইতি পড়েছিল স্কুলের গণ্ডীর। তারপরে প্রায় ৭৫ দিনের লম্বা ছুটির পরে পড়ুয়ারা ফিরল ক্লাসরুমে। তবে এবার নতুন ক্লাসরুম। নতুন ক্লাস। তবে সঙ্গী সেই চেনা বন্ধুরাই। শুধু পালটে গেছে বই। নতুন ক্লাসে উঠেই হাতে নতুন বই পাচ্ছেন পড়ুয়ারা। নতুন বছরে নতুন ক্লাসে ফিরে উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা। বহরমপুর জেএন একাডেমির ক্লাস এইটের ছাত্র যুবরাজ শিকদারের গলাতেও একই সুর।
সেও জানাচ্ছে, “স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রাইভেট টিউশনের বেশ চাপ ছিল। সেখানে বন্ধুদের সাথে দেখা হলেও স্কুলের আড্ডাটা মিস করতাম।” স্কুলে শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। তাই ব্যস্ততাও তুঙ্গে। ভর্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে নতুন বই। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের ভিড় দেখে আশাবাদী শিক্ষক শিক্ষিকারাও। বহরমপুর জেএন একাডেমির প্রধান শিক্ষক পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে। তাই ভর্তি নিয়ে একটা চাপ তো আছেই। তবে আগে ছাত্রছাত্রীদের ছাড়া খাঁ খাঁ করত স্কুলবাড়িটা। আজ প্রায় ৯০ শতাংশ পড়ুয়া উপস্থিত আছে।
হাইস্কুলের পাশাপাশি প্রাইমারী স্কুলেও শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। শীতের আমেজে সেই চেনা ইউনিফর্মে স্কুলের বেঞ্চে ক্লাস করতে দেখা গেল খুদে পড়ুয়াদেরও। নতুন বছরে, নতুন আঙ্গিকে স্কুলে ফিরছে পড়ুয়ারা। দেওয়া হচ্ছে বই। শুরু হয়েছে ক্লাসও। আবার দেখা গেল স্কুল ইউনিফর্মে পড়ুয়াদের সেই চেনা ছবি।