অধীরের ‘স্যান্টাফোকিয়া’ ৪৬ বছরে, জাঁকজমকের সাথে হচ্ছে মা কালীর আরাধনা

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ ‘স্যান্টাফোকিয়া’ নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহরমপুরবাসীর আবেগ। প্রায় ৪৬ বছর ধরে জাঁকজমকের সঙ্গে কালীপুজো করে আসছে এই ক্লাব। শহর তথা জেলার মানুষ এই পুজোকে ‘অধীরের পুজো’ নামেই চেনে। পুজোর দিন থেকে ভাইফোঁটার পরেও মূলত মন্ডপ সজ্জা দেখতে বহরমপুরে ভিড় জমান জেলার আনাচে কানাচের মানুষজন। তবে ‘স্যান্টাফোকিয়া’ নাম এল কোথা থেকে? এ প্রশ্ন তাঁদের অনেকের। স্মৃতির সরণি বেয়ে প্রায় পাঁচ দশক আগে ফিরে গিয়েছিলেন বর্তমানে এই ক্লাবের সম্পাদক গোপাল সিংহ। তিনি জানান, সেই সময়ে পাড়ায় পাড়ায় ফুটবল টুর্নামেন্টের চল ছিল। তখন ফুটবল খেলায় নামডাক ছিল আর্জেন্টিনার। গোরাবাজার জজকোর্ট মোড়ের এই ফুটবল টুর্নামেন্টের আগে রাতে তড়িঘড়ি আর্জেন্টিনার ‘Santa Fe Province’ প্রদেশের নামে এই ক্লাবের নাম রাখা হয় স্যান্টাফোকিয়া। ক্লাব তো হল, কিন্তু কালের নিয়মে উঠে গেল ফুটবল খেলা। তবে টিকে থাকল শুধু ক্লাব। ১৯৭৭ সালে ঘটা করে শুরু হল স্যান্টাফোকিয়া ক্লাবের কালীপুজো। সম্পাদক জানান, প্রথমে মাত্র তিন হাজার দু’শো টাকা বাজেট নিয়ে শুরু হয় কালীপুজো। আজ তা বিরাট অঙ্কে পৌঁছেছে। একদিনের কালীপুজো ঘিরে মন্ডপ চত্বরে বসে প্রায় দশ দিনের মেলা। মন্ডপের সামনের অস্থায়ী মঞ্চে বসে গান বাজনার আসর।

ঘটনাক্রমে আটের দশকে প্রতিষ্ঠিত স্বনামধন্য এই ক্লাবের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নাম। আগে রাস্তায় নেমে হাতে রসিদ বই নিয়ে পুজোর চাঁদা তুলতেন সাংসদ নিজেই। এখন সময়ের অভাবে তা হয় না ঠিকই তবে, এখনও কালীপুজোর সময়ে নিজের সব কাজ সেরে হাজির থাকেন মন্ডপ প্রাঙ্গণে। সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন মায়ের আরাধনা থেকে শুরু করে সমস্ত অনুষ্ঠানে। কালীপুজোর ক’দিন সাংসদ অধীরের ঠিকানা এই স্যান্টাফোকিয়ার পুজো মন্ডপ।

এবার ৪৬ বছরে স্যান্টাফোকিয়া ক্লাবের কালীপুজোর থিম ‘মায়াজাল’। বিভিন্ন জালের আকারে সাজানো হয়েছে বিশাল মন্ডপ। ভিতরে পূজিত হচ্ছেন শক্তির দেবী মা কালী। শনিবার সন্ধ্যায় এই পুজোর উদ্বোধন করেন চুঁয়াপুর ভারত সেবাশ্রম আশ্রমের মহারাজ স্বামী মঙ্গলানন্দ। সেখানে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ। রাত ১২টা তেও মন্ডপে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। উদ্যোক্তারা জানান প্রতিবারের মতো এবারও কালীপুজো উন্মাদনা থাকবে প্রায় ১০ দিন। ঘটা করে হবে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষ দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ চমকও।