Abu Hena চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হেনা। রবিবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ সল্টলেকে নিজের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আবু হেনা। বার্ধক্যজনিত কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার তাঁর দেহ কলকাতা থেকে বহরমপুরে নিয়ে আসা হয়। মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস ভবনে বেশ কিছুক্ষন শায়িত থাকে দেহ। সেখানেই প্রয়াত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন কংগ্রেস নেতা, কর্মীরা। শোক প্রকাশ করেন প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, আজকের দিনে যখন জনপ্রতিনিধি কেনা বেচা, দল ত্যাগ করে অন্য দলে সামিল হওয়ার আদর্শ বিরুদ্ধ যে রাজনীতি বাংলায় প্রচলিত হয়েছে, সেই সময়ে একটা দুর্ল্ভ ব্যক্তিত্বের অধিকারী যাকে কখনও কোন প্রলোভন স্পর্শ করতে পারে নি, যাকে কখনো কোন দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারে নি, নিষ্ঠার সাথে, পবিত্রতার সাথে, সততার সঙ্গে কংগ্রেস দলকে কখনও জনপ্রতিনিধি লালগোলা, কখনও মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের, কখনও বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি আজ আমাদের মধ্যে নেই এটা ভাবতে বেদনায় ক্লান্ত হচ্ছি। আমাদের হৃদয়ে গভীর শুন্যতা। আবু হেনা চলে যাওয়া মানে মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতির সৃষ্টি হওয়া।
Abu Hena শ্রদ্ধা জানান সিপিএম থেকে বিজেপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। আবু হেনার প্রয়াণে ভারাক্রান্ত মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনৈতিক মহল। স্মৃতি চারণায় রাজনৈতিক নেতারা। প্রবীণ সিপিএম নেতা নৃপেন চৌধুরী বলেন, একজন ভালো ব্যক্তিত্ব। রাজনীতির দিক থেকে যাই করেন ছিলেন নিষ্ঠাবান রাজনীতিক। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের আদর্শ, তার প্রতি তার নিষ্ঠা অটল ছিল। আজকের এই পরিস্থিতিতে তাঁর মৃত্যুতে ক্ষতি হল। থাকলেও তো বুদ্ধি দিত, যেভাবে সারা ভারতবর্ষে রাজনীতি হচ্ছে। কংগ্রেসের সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বামপন্থীরাও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছি। সেই লড়াই কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুর্শিদাবাদ জেলার ক্ষেত্রে।’
Abu Hena সিপিএম নেতা তুষার দে জানান, আবু হেনা মুর্শিদাবাদ জেলার কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন, খুব মৃদুভাষী এবং আক্ষরিক অর্থে বিশিষ্ট ভদ্র ব্যক্তি। তাঁর আঁচার আচরণ ব্যবহার সকলেই অনুপ্রানিত করত। আবু হেনা দীর্ঘদিন ছিলেন বিধায়ক ছিলেন।’
Abu Hena রাজনৈতিক কর্মীদের অভিভাবক ছিলেন আবু হেনা। তাঁর চলে যাওয়ায় মর্মাহত, জানালেন প্রাক্তন জেলা বিজেপি সভাপতি তথা বিজেপি নেতা শাখারভ সরকার। তিনি বলেন, অত্যন্ত মর্মাহত। উনি চলে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদ জেলায় উদীয়মান রাজনৈতিক কর্মীরা একজন রাজনৈতিক শিক্ষককে হারালেন। আবু হেনাকে বাদ দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় রাজনীতির চর্চা হতে পারে না।
Abu Hena কখনও জনপ্রতিনিধি লালগোলা, কখনও মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের, কখনও বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবু হেনা। পেশায় ছিলেন আইনজীবী। ১৯৯১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত লালগোলার কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে কংগ্রেস মন্ত্রিসভা থেকে সরে আসে। সেই সময়ে তিনিও ইস্তফা দেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী মহম্মদ আলির কাছে প্রথম পরাজিত হন। আবু হেনার বাবা আব্দুস সাত্তার ছিলেন সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য। প্রবীণ নেতাকে হারিয়ে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে।