নিজস্ব সংবাদদাতা, রানিনগরঃ গভীর রাতে কড়া নাড়ে দুষ্কৃতি। বাড়ির মালিকের স্ত্রী দরজা খুলতেই তাকে লাথি মেরে সরিয়ে দেয় তারা। এরপর বাড়ির মালিককে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে তিন রাউন্ড গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতিরা। কোনওরকমে নিজেকে রক্ষা করলেও একটি গুলি তাঁর পেটে লাগায় গুরুতর আহত হন ব্যবসায়ী মনোজ মন্ডল। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগরের চর ৫১ গ্রামে। মনোজ এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। তাকে তড়িঘড়ি প্রথমে রানিনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিশ সঞ্জয় মন্ডল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রানিনগরে হিংসার ঘটনা ঘটে। এলাকা দখলের জন্য তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে ঝামেলা হয়। বিজেপি কর্মীর উপরে হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে নাম জড়ায় তৃণমূলের। এই ঘটনায় ইসলামপুর থানায় মামলা হয়। অভিযোগ, তদন্তে নেমে পুলিশ বিজেপি কর্মী বিশ্বজিৎ মন্ডল ও তার দলবলকেই গ্রেপ্তার করে। সেই সময় তাদের অভিযোগ ছিল মনোজ মন্ডলের দলবল এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
অথচ পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে। সেই ঘটনায় জেল হেফাজত হয় বিশ্বজিৎ ও তার দলবলের। সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পায়। সেদিনের ঘটনার বদলা নিতেই মনোজের বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ বিশ্বজিতের ভাই সঞ্জয় মন্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিরা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় নি জানিয়ে রানিনগরের পুলিশের দাবি ধৃতকে জেরা করলে পুরো ঘটনা সামনে আসবে।
তবে এই ঘটনায় এলাকায় ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিজেপির মন্ডল সভাপতি আসিফ ইকবাল বলেন, ” যিনি গুলিবিদ্ধ তিনি আমাদের কর্মী। যাঁকে পুলিশ ধরেছে সেও আমাদের লোক। জখম মনোজের বাড়ির লোককে পুলিশ ভয় দেখিয়েছে তৃণমূল কর্মী না বললে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। তাই বাড়ির লোকজন নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিচ্ছেন।” রানিনগর থানার অন্তর্গত মালিবাড়ি ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের মহম্মদ জাহাঙ্গী আলম বলেন, ” আমাদের কর্মী মনোজকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করেছে বিজেপির লোকজন।”