দেবনীল সরকার, বহরমপুরঃ মহানগরীতে রবিবার ডিওয়াইএফআইয়ের ব্রিগেড। তার আগে জেলায় জেলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শনিবার থেকেই ঐতিহাসিক মাঠে শুরু হবে জনসমাগম। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ব্রিগেডের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে দেড়শোটি বাস ও প্রায় চারশোর বেশি ছোট গাড়ি। বাস পিছু ২৫ হাজার টাকা ও ছোট গাড়ি পিছু ৪ হাজার টাকা ভাড়া। সব মিলিয়ে শুধু যাতায়েতের জন্য খরচের অঙ্কটাও ৫০ লাখ ছাড়াবে, দাবি বাম যুব নেতাদের।
ডিওয়াইএফআই জেলা সম্পাদক সন্দীপন দাস আরও দাবি করেন, “জলঙ্গি থেকে রানিনগর, ফরাক্কা থেকে সাগরদিঘির মানুষ শুক্রবার থেকেই ব্রিগেডমুখী।” প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ জেলা থেকে যুবদের সমাবেশে কলকাতা যাবেন বলে দাবি তাঁর। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াতের এই বিরাট খরচ কীভাবে সামলাবে বামেরা? উত্তরে সন্দীপন বলেন, ” হ্যাঁ খরচ তো অনেক। তবে যাঁরা মন থেকে কিছু চান, তাঁদের কাছে টাকাপয়সা কোনওদিনই বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আগেও টাকা পয়সা কখনও আমাদের দমাতে পারেনি। মানুষের ব্রিগেড সফল করতে আমাদের একমাত্র হাতিয়ার ক্রাউডফান্ডিং।”মানুষের কাছে কখনও লাল সালু বিছিয়ে কখনও কৌটো নিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা বামেদের পুরনো নীতি। সেই নীতিতেই ভরসা রেখেছেন নয়া প্রজন্মের যুবরাও। দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় ইনসাফ যাত্রা শুরুর সময় যুব কর্মীদের মধ্যে ১০ হাজার প্লাস্টিকের কৌটো বিলি করা হয়েছিল। সেই কৌটো বায়না দেওয়া হয়েছিল মুর্শিদাবাদেরই ওমরপুরের একটি প্লাস্টিক কারখানায়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তারমধ্যে সাত হাজার কৌটোর অনুদান জেলা কার্যালয়ে জমা পড়েছে। তাতে মিলেছে প্রায় দশ লক্ষ টাকা। সন্দীপন বলেন,” আজ বাস ধর্মঘট না থাকলেও বাকি কৌটোও চলে আসত।”
শুধু কৌটোর অনুদান নয়, বাম যুবরা বিগ্রেড যাত্রার রসিদ ছাপিয়েও মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন অর্থ সংগ্রহের জন্য। দলের সাদা পতাকা বিছিয়ে অর্থও জোগাড় করেছেন মুর্শিদাবাদের যুবরা। তিন মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা। সন্দীপন বলেন, ” যাতায়াত থেকে শুরু করে ব্রিগেডমুখী মানুষজনের খাওয়াদাওয়া সব খরচই হবে এখান থেকে।”
বাম গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের ডাকে শেষবার ব্রিগেড হয়েছিল ২০০৮ সালে। তার ১৬ বছর পরে ২০২৪-এর জানুয়ারির ব্রিগেড নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত ডিওয়াইএফআইয়ের প্রাক্তনীরাও। সেই সময় ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন আভাস রায়চৌধুরী। বর্তমান সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লাও ওই পদে ছিলেন ২০১২। সবেমাত্র রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা জামির এদিন বলছেন, “সেবারের ব্রিগেড ছিল উৎসবমুখী। রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল বামেরা। কিন্তু এবারের ব্রিগেড উল্টো। এবার মানুষের হক আদায়ের লড়াই লড়তে নেমেছেন মীনাক্ষীরা। স্বাভাবিকভাবেই এই ব্রিগেডের গুরুত্ব অনেকগুণ বেশি। এবারের ব্রিগেড আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দেবে।”