২০২৩’এ মুর্শিদাবাদের বিধায়কদের বাড়িতে সিবিআই, আয়কর হানা । কী হবে সামনের বছর ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

ফিরে দেখা ২৩ঃ  কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে ২০২৪-এর। নতুন বছরে ইতিমধ্যে নিজেদের এজেন্ডাও ঠিক করে ফেলেছেন সকলেই। বাদ নেই রাজনীতির কারবারিরাও। তবে বছর যে নিজের হিসেবে চলে না, তা চলে যাওয়া বছর টের পেয়েছেন তাঁদের একাংশ। ২০২৩এ মুর্শিদাবাদে রাজ‍্যের শাসক দলের চার বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় কখনও ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট কখনও সিবিআই। কারও বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ, কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ। বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার জেল হেফাজতের শুরু কিন্তু ফেলে আসা বছরেই। যা নিয়ে বিরোধী তো বটেই শাসকের অন্দরেও উঁকি দিয়েছে সন্দেহ।

যদিও জার্নিটা শুরু হয়েছিল ২০২৩-এর শুরুর দিন পনেরোর মধ্যেই। ওই বছর ১১ জানুয়ারি জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে আচমকা হাজির আয়কর দপ্তরের কর্তারা। প্রায় বারো ঘন্টা প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে নগদ এক কোটি টাকা উদ্ধার করে নিয়ে যান তাঁরা।  । যা নিয়ে তোলপাড় হয় জেলা রাজনীতি। তার আঁচ পরে রাজ্যতেও।

 

তখনও ঘা শুকোয়নি। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়িতে হানা দিল সিবিআই কর্তারা। দিনভর তল্লাশির পাশাপাশি বিধায়করা টানা জেরা করেন বিধায়করা। এক সময় নিজের দামি ফোনের মায়া ত্যাগ করে তা নিজের পুকুরে ফেলে দিলেও রেহাই পাননি জীবন। সিবিআইয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা ছাড়ে দিন দুয়েক পরে। যা নিয়েও হইচই কম হয়নি জেলায়।

এরপর মাস ছয়েকের বিরতি। পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটে গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদ দখল করেছে তৃণমুল। এমন সময় যখন কোমর বেঁধে মানুষের উন্নয়নে কোমর বাঁধছে শাসক, সেই সময় সীমান্তবর্তী মহকুমা ডোমকলে শোনা গেল সিবিআইয়ের-র সাইরেন। নভেম্বরের ২৭ তারিখ, সবেমাত্র কাঁপুনি ধরাচ্ছে উত্তুরে হাওয়া। মুর্হুতেই সেই শীতভাব উড়িয়ে সিবিআই কর্তারা এলেন ডোমকলের বিধায়ক জাফিকুল ইসলামের বাড়িতে। এক্ষেত্রেও অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে আছেন বিধায়ক। সিবিআই -র কর্তারা এলেন, কিন্তু ওইদিন জাকির এলেন না এলাকায়। চোর-পুলিশ খেললেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তাদের সঙ্গে। ওইদিন বেশ কয়েক ভরি সোনার গহনা সহ নগদ ২৮ লক্ষ টাকা বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে তাঁরা কলকাতার পথ ধরেন।

মাস খানেকের মধ্যে আবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির পাড়ি দিল উত্তুর মুর্শিদাবাদে। এবার ঠিকানা দলবদলু বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের বাড়ি। বিড়ি ব্যবসায়ী বাইরনের বিরুদ্ধেও আয়কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ। বাইরনের বাবা বাবর বিশ্বাস নামী বিড়ি ব্যবসায়ী। ছেলের কীর্তিতে কেঁদে ভাসালেন। সারাদিন ব্যবসার কাগজপত্রে চোখ বুলিয়ে, বিধায়ককে জেরা করে যখন ধুলিয়ান ছাড়লেন আয়কর দপ্তরের কর্তারা, তখন রাত হয়েছে। ১৯ ঘন্টার তদন্ত শেষে ফেরার সময় একটি লাল রঙের ট্রলি নিয়ে যেতে দেখা যায় কেন্দ্রের দুঁদে গোয়েন্দাদের। শোনা যায় তাতে নাকি নগদ ৭০ লক্ষ টাকা ছিল।

এখনও তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। নতুন বছর দোরগোড়ায়। জেলার বিধায়কদের মন নাকি বলছে নতুন বছরে কীজানি কী হয়, কী হয়?