Pabitra tribedi : পুজো এলে যেন নতুন বাতাস আসে। পুজো এলে যেন মন – পাখি হাওয়ায় ডানা মেলে। পুজো মানেই আনন্দের হিল্লোল । ক্যালেন্ডারে দিন কমছে। পেঁজা তুলোর মেঘ হাসতে হাসতে ভাসছে । নদীর ধারে কাশফুলের দোলা। আগমনীর সুরে এগিয়ে আসছে শিউলি ফুলের সুবাতাস। দু’বছর করোনার অতিমারির পর এইবার জমজমাটি দুর্গাপুজো । ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পর জৌলুস আরও বেড়েছে। নতুন জামা-কাপড় কেনা, হোটেল রেস্তোঁরায় নতুন খাবারের জন্য হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ চারিদিক। ফিরে এসেছে ছেলেবেলা থেকে দেখা পুজোর সেই পুরনো দিন। এবার পুজোয় বিজ্ঞাপনের নিত্যনতুন চমকও জমে উঠেছে । – -“-হোয়াটসঅ্যাপে অর্ডার দিন। অনলাইন পেমেন্টে নতুন জামা নিন। ” ” ঘরের ডাইনিং রুমে খাবারের অর্ডার দিন, কিছুক্ষণ পরে সেখানেই ইন্ডিয়ান, কন্টিনেন্টাল ডেলিভারি নিয়ে নিন । ” দুর্গাপুজো এগিয়ে আসতেই বিজ্ঞাপনের ক্যাপশনে জমজমাট চারিদিক। এমনিতেই অনলাইনের যুগ। পৃথিবী পাল্টাচ্ছে প্রতিবছর। বিজ্ঞাপনের চমক নতুনভাবে অভিনব পদ্ধতিতে হচ্ছে। দু’বছর করোনা অতিমারির পরে এবার যেন নব অলংকারে সেজে উঠেছে বহরমপুর শহর। এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেও রাস্তায় তাকালেই চোখে পড়ছে নিত্যনতুন রঙে সাজানো ফ্লেক্স। প্রতিবার পুজোতে নতুন ক্যাপশন, স্লোগান দিয়ে বিজ্ঞাপন দেয় বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এবারও সেখানে রয়েছে নতুন চমক । ভাষার কারিগরি । কে কত সুন্দর ছবি দিয়ে মানুষের মন টানতে পারে কার্যত অলিখিত প্রতিযোগিতা তাদের মধ্যে। বহরমপুর শহরে ঘুরলেই দেখা যাবে একটা জিনিস বিজ্ঞাপনে অবশ্য কমন। প্রায় সব জায়গাতেই কার্যত লেখা হচ্ছে চিরন্তন সেই ক্যাপশন, পারিবারিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ পরিবারেই আনন্দ দুর্গাপুজোর। সব মিলিয়ে পুজোর কয়েকটা দিন শারদীয়া উৎসব একটা পরিবার হয়ে ওঠে ।
বিজ্ঞাপনে অভিনব পদ্ধতি দেখা যাচ্ছে এক একটি প্রতিষ্ঠানে। কান্দি শহরে রাস্তায় দেখা গেল, একটি শপিং মলের পক্ষ থেকে নতুন রকমের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। ঢাক বাজিয়ে ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পোশাক পড়ে কলেজের ছেলে মেয়েরা লাইন দিয়ে এগিয়ে চলেছে। অ-আ-ক-খ লেখা পোশাকে বাঙালিয়ানার ছাপ।
বহরমপুরের একটি বস্ত্র প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন দিয়েছে, ” এবার পুজোয় স্কুটি পেতে, আসতে হবে কাভেরীতে । জমজমাটি শারদ প্রাতে সোনা পাবেন হাতে হাতে। ” সেখানে আরও বলা হয়েছে ” 25 আগস্ট থেকে 1 অক্টোবর পর্যন্ত পেয়ে যান গোল্ড কয়েন। ”
আবার একটি সোনার দোকানের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে এভাবে , দশোভূজার আগমনে সাজের আবাহনে। সেখানে বলা হয়েছে সোনার গহনা প্রস্তুত করতে কুড়ি শতাংশ ছাড়। ডায়মন্ড অর্থাৎ হীরের গহনা প্রস্তুত করতে দশ শতাংশ ছাড়। শাড়ির পাশাপাশি পাঞ্জাবিতে নিত্যনতুন চমক প্রতি পুজোতেই থাকে। সেখানে একটি পাঞ্জাবি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 35 বছরের ঐক্য আপনাদের সাথে। ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার বৃহত্তম পাঞ্জাবির শোরুম । এখনো অনেক বড় আকারে। বেশি স্টক।
একটি বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে, ” অ্যানিভার্সারি 25 ইয়ার সেলিব্রেশন। ” ” কেনাকাটার বস্ত্র বিপনী মনমোহিনী এখন রঘুনাথগঞ্জে । 25 বছর আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ”
একটি বিজ্ঞাপনে নিত্যনতুন স্টক ও বিপুল সম্ভার নিয়ে সর্ববৃহৎ পারিবারিক বস্ত্র প্রতিষ্ঠানের কথা বলা আছে। বোরখা, পাঞ্জাবি, শাড়ি, সুটিং-সাটিং , রেডিমেড পোশাক। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হোম ডেলিভারির কথা বলা আছে।
একটি নিরামিষ রেস্তোরাঁর বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়ান, সাউথ ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল অর্ডার অনলাইনে। হোম ডেলিভারি ফ্রি।
কোথাও লেখা রয়েছে শারদ শুভেচ্ছা, মার্বেল স্ল্যাবে ছাড় 12 শতাংশ, 20 শতাংশ ছাড় গ্রানাইটে, 10 শতাংশ ছাড় টাইলসে। ডেলিভারি ফ্রি।