রাহি মিত্রঃ হেমন্তের বৃষ্টিতে ভিজে গেছে আজকের সকাল । কার্তিকের শুরুর দিক হলেও এ সময়ে বৃষ্টি তেমন হয়না । তবে এখন তো ঘূর্ণাবর্ত আর নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টির সেই প্রথাগত সময় আর নেই তেমন । আর এখন ওয়েদার রিপোর্ট তো জানিয়ে দেয় বৃষ্টির পূর্বাভাস । তাই বৃষ্টি ভেজা দিনের সব খবর আমরা আজকাল পেয়েই যাই আগে । তবু সকালবেলায় যদি ঘুম ভাঙ্গে বৃষ্টির ডাকে , তবে সেদিনটা যতই কাজের দিন হোক না কেন , একটু আলস্য আর মন কেমনের একটা তাগিদ অনুভব করেন না এমন মানুষ হাতে গোনা ।
আসলে সব যোগ বিয়োগ এর আগে বা পরে আমরা কিন্তু সকলেই একটা ‘ আমি ‘ র নিয়ন্ত্রণে থাকি । যেখানে বসের হুংকার বা সহকর্মীদের ইঁদুর দৌড়ের কোনো প্রভাব পড়ে না।
তাই আজ মনে মনে বলতেই পারি ..
আজ কাজ করছি না আমি তেমন৷,
আজ বিছানায় লেপ্টে থাকবো অনেকক্ষণ….
আজ আমি কেবল আমারই মতন !
মনে আছে অনেক ছোটতে বৃষ্টির দিনে তিন তলা ছাদে গিয়ে রীতীমতো ভিজেছি । সাথে আশপাশের সঙ্গী-সাথীরা যোগ দিত যে যার ছাদ থেকেই । কিছুটা বড় হলে ছাদে গিয়ে ভেজার বদল এল গ্রিল বারান্দায় হাত বাড়িয়ে একটা বা দুটো হাত দিয়ে বৃষ্টি ভেজার আনন্দ নেওয়া । তারপরে স্কুলে ভেজার দিন গুলো দারুন ছিল আমাদের । স্কুলে মানে বহরমপুরে মহারানী কাশীশ্বরী গার্লস স্কুলের পিছনের গেটের মাঠে অনেক ভিজেছি । মাঠে জমা জলের প্রায় হাটু অবধি ভিজে যে মজা নিয়েছি তা বোঝানো কঠিন ।
এরপরে কলেজেও রীতিমতো ভিজেছি আমরা কয়জন বন্ধু । বেশ কয়েকদিন নেহাতই ভিজবো বলে আমরা বৃষ্টিতে বেরিয়ে পড়েছি কলেজ থেকে ।
যেখানে কালেক্টরেট ভবন সেই রাস্তা দিয়ে আমরা কজন বন্ধু মিলে বহরমপুর গার্লস কলেজ থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেছি স্কোয়ার ফিল্ড দিয়ে জল ট্যাংকের মোড় ছাড়িয়ে ।
বৃষ্টি দিনের এমন আনন্দ আর মজার দিনের পাগলামো আমাদের ঝুলিতে এখনো যে নেই তা কিন্তু নয়।
তবে সময় বিশেষ সাথ দেয় না পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে । তাই বৃষ্টির দিনে অনেক ইচ্ছে মনে মনে করি । মনে মনে তার প্লানিং হয় , আর মনে মনেই তা পূরণের সাধ মিটে যায় ।
আজকের দিনটাতেও তেমনই প্ল্যানিং করছি । তবে যতই প্ল্যানিং করি না কেন একটা অনুভব আজ বড়ই সত্যি বলে মনে হয়…
তুমি ভাবছো মেঘ করেছে
বৃষ্টি পড়বে অনেকক্ষণ
আসলে তো মেঘ করেনি
মন খারাপের বিজ্ঞাপন
মেঘলা বৃষ্টির দিনের সাথে মন খারাপের একটা যোগ পাই আজ । বাকি যা কিছু সুখের অনুভূতি বৃষ্টির দিনের ।