মধ্যবঙ্গ নিউজ ব্যুরোঃ ০৯ অক্টোবরঃ হুমায়ুন কবির কি তৃণমূল দলের সঙ্গে ফের এসপার-ওসপার করতে চাইছেন ? শনিবার বিকেলে তার ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সালারের এক বেসরকারি অনুষ্ঠান বাড়িতে বিজয়া সম্মিলনী সভায় কার্যত তারই পটভূমিকা তৈরি করলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । তৃণমূলের একাংশের নেতারা বলছেন, হুমায়ুন এই মুহূর্তে দল যে কিছুটা রাজনৈতিকভাবে ব্যাকফুটে রয়েছে তার ফায়দা তোলার জন্য এই ধরণের মন্তব্য করে একাংশের মানুষকে সংগঠিত করতে চাইছেন। যদিও হুমায়ুন কবিরের সাফ কথা, আমি রাজনীতিতে দীর্ঘদিন রয়েছি। সোজা ব্যাটে খেলাই পছন্দ করি। কিছু নেতার মতো সামনে এক, পিছনে আরেক বলি না। আর তার জন্যই আমি অনেক সময় অনেকের কাছে অপ্রিয় হই।
শনিবার সালারের বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চে বিতর্কিত নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির আবেগ মথিত হয়ে কার্যত হুমকির সুরেই দলের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে, নাম না করে তোপ দেগে বলেন , “যারা আমাদের চেয়ারম্যান ( নাম না করে- আবু তাহের খান ) , প্রেসিডেন্ট ( নাম না করে- শাওনী সিংহ রায়) কেউ অন্য জায়গা আলোকিত করে বড় বড় কথা বলছেন আর তাদের মদতে সালারে আমাকে বড় বড় চ্যালেঞ্জ করছেন তোমাকে ( নাম না করে -মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমনকে) বলছি , তোমার গুরুর কাছে একবার ভালো করে খোঁজ নিও। বহরমপুরে একটা তাড়া যেদিন মারব না; সেদিন তোমার গুরুও যাবে, তুমিও যাবে, আর সেও যাবে । আমাদেরকে বেশি পাঙ্গা নেবে না ভাই”।
হুমায়ুন আরও বলেন, “কেউ আমাদের সাথে বেশি পাঙ্গা নিতে আসবেন না । লোহা যেমন যত তাতাবেন হাতুরি ঠুকবেন তত লাল হবে আর তত শক্ত হবে। আমি বলছি হুমায়ুন কবিরের সাথে অনেক রথি মহারথী পাঙ্গা নিয়েছে। প্রয়াত মান্নান হোসেন, প্রয়াত আরও অনেক নেতা তাঁরা কিন্তু অধীর চৌধুরীকে একেবারে ফিনিশ করতে চেয়েছিল ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। অনেক রথী মহারথী সেদিন অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছিল । আর আজকে তারা তৃণমূলের অনেক বাঘ ভাল্লুক হয়েছেন । আমি অধীর চৌধুরীর কাছে ছিলাম । ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সালের ২০শে নভেম্বর পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রথম একাদশের সদস্য ছিলাম, অধীর চৌধুরীর কিচেন রুমের সদস্য ছিলাম । আর আজকে যারা আমাদের ঘারের মাথার চুল চেপে ধরে নাচছে তাঁরা সেদিনকে তৃতীয় বেঞ্চে বসত”।
হুমায়ুনের শনিবারের এই আচরণে কার্যত বিব্রত তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় ও চেয়ারম্যান আবু তাহের খান। ক্ষুব্ধ শাওনির মন্তব্য, বিধায়কের বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা নেওয়ার রাজ্য নেতৃত্ব নেবেন । চেয়ারম্যান, সাংসদ আবু তাহের খান এই মুহুর্তে দিল্লিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনিও হুমায়ুনের উপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়ে রাজ্য নেতৃত্বের দিকেই পদক্ষেপ গ্রহণের ভার তুলে দিয়ে অপেক্ষা করতে চাইছেন।