স্কুল নাকি রেশনের দোকান ? নেই পড়াশোনার পরিবেশ, উদ্বিগ্ন প্রধান শিক্ষকরাই । বহরমপুরে আলোচনা

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ  খাগড়া গুরুদাস তারাসুন্দরী ইনস্টিটউশন স্কুলে অনুষ্ঠিত হল অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস – এর মুর্শিদাবাদ শাখার প্রথম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলার প্রায় ১১০ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। রাজ্যজুড়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ওপর যে বঞ্চনা হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হয় এই সভায়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ে শিক্ষা বহির্ভূত কাজের পরিমাণ বেড়েছে। শিক্ষকদের প্রধান কাজ ছাত্রদের প্রস্তুত করা তাদের উপযুক্ত পঠনপাঠন দেওয়া। কিন্তু ইদানিং সেই কাজ হচ্ছে না সঠিকভাবে, দাবী প্রধান শিক্ষকদের। কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর মতো ১৮ টি আলাদা আলদা সরকারী প্রোজেক্টে কাজ করতে হচ্ছে তাদের, যেগুলির সাথে শিক্ষার সরাসরিভাবে কোন সম্পর্ক নেই। এই কাজ গুলি করতে তাঁরা শারীরিক ও মানসিকভাবে হিমসিম খাচ্ছেন, যার ফলে বিদ্যালয়ের পড়াশোনার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে।

অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস – এর মুর্শিদাবাদ শাখার সম্পাদক, সর্বাঙ্গপুর জনকল্যাণ সংঘ আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নিমাই পাল বলেন, “ শিক্ষাঙ্গন একটি রেশনের দোকানে পরিণত হয়েছে । একজন প্রধান শিক্ষকের যে কাজ থাকে তার বাইরেও ১৭টি ভিন্ন সরকারী কাজ করতে হয় আমাদের। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, জুতো দেওয়া, ড্রেস দেওয়া, বই দেওয়া ইত্যাদি। স্কুলে এসে পড়াশোনার কথা কিছু হয়না। এই সরকারী কাজ নিয়েই আমরা ব্যস্ত হয়ে থাকছি।”

তিনি আরও বলেন, “ আমরা এই সরকারী স্কিমের বিরধিতা করছি না! তবে শিক্ষকদের দিয়ে যাতে এই কাজ না করানো হয়। কোন NGO, সেলফ হেল্প দলকে বা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এই কাজ করানো হোক যাতে ছাত্ররা উপকৃত হয়। ছাত্ররা স্কুলে আসে পড়তে, সেখানে এসে যদি পড়তেই না পারে তাহলে আমরা কী কাজ করব। হেড মাস্টার হিসাবে আমাদের কাজই বৃথা হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে আমরা আজ জমায়েত হয়েছিলাম। আমাদের এই শিক্ষা বহির্ভূত কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। সরকার চাপ দিয়ে আমাদের দিয়ে এই কাজ করিয়ে নেই, তার বিনিময়ে আমাদের মাত্র ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষকদের প্রতি এই বঞ্চনার বিরোধিতা করছি।”

এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিদ্যালয়ে পঠন পাঠনের উন্নতি সাধন। সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তাঁরা স্পষ্টভাবে সরকারের উদ্দেশ্যে দাবী রাখেন, প্রধান শিক্ষকরা শুধুমাত্র পঠন পাঠনের কাজেই যুক্ত থাকতে চান। শিক্ষা বহির্ভূত কাজে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিযুক্ত করা চলবে না। শেষে বলেন, “ সরকার এই বিষয়ে উপযুক্ত কোন পদক্ষেপ না নিলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব।”